ব্যাঘ্রাসন। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
লকডাউনে বাইরে বেরনো বন্ধ হওয়ায় অনেকেরই শিকেয় উঠেছে রুটিন শরীরচর্চা। কিন্তু এতে ক্ষতি নিজেরই। তাই বাড়িতেই অভ্যাস করুন প্রয়োজনীয় কসরত। ছুটোছুটি ও জিম বন্ধের ক্ষতি পুষিয়ে যাবে। আমরা প্রতি দিন হদিশ দিচ্ছি একটি করে ব্যায়ামের। আজ ৪৬তম দিন।
ব্যাঘ্রাসন কী
ব্যাঘ্র মানে বাঘ আমরা সকলেই জানি। গভীর ঘুম থেকে উঠে বাঘ যে ভাবে আড়ামোড়া ভাঙে, সেই ভঙ্গিমাতে ব্যাঘ্রাসন করা হয়। এটি আসলে এক ধরনের স্ট্রেচিং আসন।
কী ভাবে করব
· ম্যাটের ওপর হাঁটু গেড়ে বসুন। দুই হাত কাঁধ বরাবর সোজা করে মাটিতে রাখুন। পিঠ থাকবে মাটির সমান্তরালে। সামনের দিকে তাকিয়ে মুখ ও মাথা সোজা রাখুন পিঠের সঙ্গে সরলরেখায়। এটি শুরুর অবস্থান।
· ডান পা ওপরের দিকে তুলুন। হাঁটু থেকে ভাঁজ করে পা মাথার কাছে আনার চেষ্টা করতে হবে। পায়ের বুড়ো আঙুল মাথার দিকে থাকবে। এই অবস্থানে শিরদাঁড়া খানিকটা নীচের দিকে নেমে আসবে।
· এ বারে ধীরে ধীরে শ্বাস টানতে টানতে ডান পা নীচে নামিয়ে হাঁটু ভাঁজ করে বুকের কাছে আনার চেষ্টা করুন। একই সঙ্গে মাথা হাঁটুর দিকে নামিয়ে আনুন। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই পা বা হাঁটু যেন মাটিতে ঠেকে না যায়। পিঠ উটের কুঁজের মতো উঁচু থাকবে।
· এক রাউন্ড সম্পূর্ণ হল।
· আস্তে আস্তে শুরুর অবস্থানে ফিরে আসুন। ডান পা দিয়ে এই আসন অভ্যাস করুন ৩–৫ রাউন্ড।
· একই ভাবে বাম পা প্রথমে মাথার ওপরে ও পরে ভাঁজ করে সামনের দিকে এনে অভ্যাস করতে হবে ৩–৫ রাউন্ড।
· এর পর শবাসন বা আপনার পছন্দের কোনও আরামদায়ক আসন করে বিশ্রাম নিন।
আরও পড়ুন: ৪৫তম দিন: আজকের যোগাভ্যাস
মনে রাখবেন
হাঁটু ব্যথা, অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ, মাথা ঘোরা, ঘাড় ও শিরদাঁড়ার সমস্যা থাকলে আসনটি অভ্যাস করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কেন করব
ব্যাঘ্রাসন অভ্যাস করলে শিরদাঁড়ার জড়তা কেটে যায়। দু’দিকে পা তোলা ও নামানোর ফলে পিঠের স্নায়ু উজ্জীবিত হয়। ফলে মেরুদণ্ড নমনীয় হয়।এই আসন নিয়মিত অভ্যাস করলে পিঠের দিকের সায়টিক নার্ভের জড়তা কেটে গিয়ে সায়টিকার ব্যথা লাঘব হতে সাহায্য করে। এই আসন মেয়েদের প্রজনন অঙ্গ দৃঢ় করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে সন্তানের জন্মের পর নিয়মিত ব্যাঘ্রাসন করলে পেটের শিথিলতা স্বাভাবিক হয়ে দৃঢ় ও টানটান হয়। এ ছাড়া নিতম্ব ও ঊরুর বাড়তি মেদ ঝরতে সাহায্য করে। ব্যাঘ্রাসনে শরীরের এক এক দিকের ঝোলানো অবস্থান সামগ্রিক ভাবে শারীরিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে বাইসেপস ও ট্রাইসেপস পেশীতে রক্ত চলাচল বাড়ে। ফলে এই পেশী সুগঠিত হয়। আসন অভ্যাস করাকে রোজকার জীবনের অঙ্গ করে তুলুন, ভাল থাকুন।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)