ব্লুটুথ থেকেও বিপদ হতে পারে? ছবি: সংগৃহীত।
বন্ধুদের সঙ্গে কথা শুরু হলে এক ঘণ্টার কমে কেউ ফোন ছাড়েন না। অফিসে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ভার্চুয়াল মিটিং চলে। তখনও সেই হেডফোনই ভরসা। কাজ থেকে ফিরে গান শোনা, সিরিজ় দেখা কিংবা মনের মানুষটির সঙ্গে কথা বলার সময়েও তাই। কিছু দিন আগে পর্যন্ত ফোনের সঙ্গে তার দিয়ে যুক্ত ইয়ারফোন ব্যবহার করার চল ছিল। তবে, ইয়ারফোনের সঙ্গে ফোনটিকেও নিয়ে যেতে হত। ফোন চার্জে বসিয়ে হেডফোনে কথা বলা সুবিধাজনক। তাই ইদানীং এই ধরনের ব্লুটুথ হেডসেটের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। কিন্তু দীর্ঘ ক্ষণ এই ধরনের যন্ত্র কান বা মাথার সঙ্গে যুক্ত থাকলে শরীরে কি একেবারেই তার কোনও প্রভাব পড়ে না?
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ব্লুটুথ থেকে রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি নির্গত হয়। ২.৪ গিগাহার্ৎজ় এই রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সি কাজ করে। ব্লুটুথ থেকে নির্গত হয় ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশনও। এই রেডিয়েশন আবার দু’ধরনের। আয়োনাইজ়িং এবং নন-আয়োনাইজ়িং। ব্লুটুথ থেকে যে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন নির্গত হয়, সেটি নন-আয়োনাইজ়িং। এই ধরনের বিকিরণ ক্যানসার-সহ নানা ধরনের সমস্যার আশঙ্কা বাড়িয়ে দিতে পারে। আবার অনেকের ধারণা, ব্লুটুথ ইয়ারফোন এবং হেডফোনের কারণে ক্যানসার হতে পারে না। কারণ এই যন্ত্র থেকে যে বিকিরণ ঘটে, তার মাত্রা খুবই কম। কথাটি একেবারে সত্যি। তবে সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা অন্য আরও একটি সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন। সেটি হল, ‘স্পেসিফিক অ্যাবজ়র্বশন রেট’ বা ‘এসএআর’।
কী এই ‘এসএআর’? এই যন্ত্র থেকে নির্গত রেডিশনের কতটা শরীরে ঢুকছে, তা পরিমাপ করার মাত্রা এটি। ব্লুটুথ ইয়ারফোন এবং হেডফোনে বিকিরণের মাত্রা খুব কম হলেও এগুলি শরীরের, বিশেষ করে মাথার এবং গলার এত কাছে থাকে, যে ‘এসএআর’-এর মাত্রা অনেকখানি বেড়ে যাওয়া অস্বাভাবিক নয়। সেটিই ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়িয়ে দিতে পারে। যদিও এ সম্পর্কে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলার মতো তথ্যপ্রমাণ এখনও মেলেনি।
তবে চিকিৎসকেরা বলছেন, দীর্ঘ ক্ষণ কানে সাধারণ হেডফোন গুঁজে রাখলে যে ধরনের সমস্যা হয়, ব্লুটুথ হেডসেটের ক্ষেত্রেও তাই হতে পারে। কানে যন্ত্রণা, মাথাধরা, ক্লান্তি, মানসিক সমস্যা কিংবা চুল পড়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।