সপরিবার ঋদ্ধিমান সাহা। ছবি: সংগৃহীত।
আগের বছরও ঘটা করে পালিত হয়েছিল জামাইষষ্ঠী। নিজের হাতে পঞ্চব্যঞ্জন রেঁধে জামাইকে খাইয়েছিলেন শাশুড়িমা। জামাইও সোনামুখ করে সব খাবার খেয়ে নিয়েছিলেন। এ বছর অবশ্য জামাইষষ্ঠী উদ্যাপন সম্ভব হচ্ছে না। কারণ জামাইয়ের নাম ঋদ্ধিমান সাহা। আইপিএলে গুজরাত টাইটান্সের অন্যতম মুখ। ২৬ তারিখের ম্যাচে মুম্বইকে হারাতে পারলে, পর পর দু’বছর গুজরাতের হয়ে ফাইনাল খেলবেন বাঙালি এই উইকেটরক্ষক। জামাইষষ্ঠী না হয় পরে পালন করা যাবে, ঋদ্ধিমান যেন ফাইনাল খেলতে পারে, সেটাই মনেপ্রাণে চাইছেন স্ত্রী দেবারতি মিত্র। ঋদ্ধিমান যাঁকে রোমি বলে ডাকেন।
ঋদ্ধিমান আর দেবারতির দাম্পত্য সম্পর্কের বয়স দেখতে দেখতে ১২ বছরে পা দিয়েছে। অরকুটে আলাপ দু’জনের। সেখান থেকে প্রেম। চার বছর পর বিয়ে। ঋদ্ধিমান কলকাতায় থাকলে বেশ সাড়ম্বরেই জামাইষষ্ঠী পালন করা হয়। সারা বছর স্ত্রীর রান্না করা খাবার খেতে পছন্দ করলেও এই একটি দিনে শাশুড়িমায়ের হাতের খাবার খেতে চান তিনি। মটন থেকে ইলিশ, চিংড়ি থেকে শেষ পাতের মিষ্টি— সবই খান। তবে চেখে দেখার মতো করে। ঋদ্ধিমান কি এমনিতে খাদ্যরসিক? আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নের উত্তরে দেবারতি বলেন,‘‘হ্যাঁ, হ্যাঁ। ও খেতে খুব ভালবাসে। তবে বিশাল পরিমাণে কিছু খায় না। কিন্তু সব কিছু একটু একটু খায়। ইলিশ আর চিতল মাছ খেতে ভালবাসে। মিষ্টি খেতে তো অসম্ভব পছন্দ করে। খাওয়াদাওয়া ছাড়াও জামাইষষ্ঠীর তো কিছু নিয়মও রয়েছে। সেগুলিও সব মানে ঋদ্ধি। আর খেলা থাকলে তো আর সব সময় এ ভাবে পালন করা সম্ভব হয় না। তখন খাওয়াটা বাকি থাকে। ও ফিরলে ওকে খাওয়ানো হয়।’’
জামাই হিসাবে ঋদ্ধিমানকে চেনালেন স্ত্রী দেবারতি। ছবি: সংগৃহীত।
খেলার মাঠে ঋদ্ধিমানের পারফরম্যান্স নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। কিন্তু জামাই হিসাবে কতটা দায়িত্বশীল এই উইকেটরক্ষক? দেবারতির কথায়, ‘‘ও তো বাড়িতে থাকেই না। ফলে আলাদা করে খুব যে দায়িত্ব পালন করতে পারে, তা নয়। তবে ঋদ্ধিমান ওর শ্বশুরবাড়িতে একেবারেই বাড়ির ছেলের মতো। জামাইয়ের মতো নয়। খুব ছোটখাটো বিষয়ে ওর নজর। আমার মায়ের যদি হেডফোন নষ্ট হয়ে যায়, সঙ্গে সঙ্গে কিনে আনে। মানে খুব দামি কোনও শাড়ি বা কোনও উপহার দিল, এমন নয়। দৈনন্দিন জীবনে যা দরকার, সেই প্রয়োজনগুলি মেটাতেই ও ভালবাসে। আমাকেই কোনও দিন উপহার দিল না। (হাসি)।’’
কেকেআরের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলতে কলকাতায় এসেছিলেন ঋদ্ধিমান। কিন্তু কোভিড হওয়ায় স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি দেবারতি। অনেক দিন দেখা হয়নি বলে একটু মনটা খানিক খারাপ। তবে গতকালই কথা হয়েছে। মেয়ের জন্মদিন ছিল। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে নামার আগে প্রস্তুতির ফাঁকে ফোন করেছিলেন ঋদ্ধিমান। কী কথা হল দু’জনের? দেবারতি লাজুক গলায় বলেন,‘‘জিতে ফিরতে বলেছি।’’