প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কেউ ওজন কমাতে, কেউ টোনড বডি পেতে, কেউ পেশি তৈরি করতে... নানা চাহিদা নিয়ে জিমে ভর্তি হন অনেকে। কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসকরাই পরামর্শ দেন জিমে যাওয়ার। কারণটা হয়তো ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ওবেসিটি বা অন্য কিছু। আপনি ভাবছেন, জিমে ভর্তি হলেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তা কিন্তু নয়। সেখান থেকে নতুন সমস্যার সূত্রপাতও হতে পারে। শহরে যত্রতত্র জিম গজিয়ে উঠেছে। কিন্তু ক’টা জায়গায় স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে, বৈজ্ঞানিক উপায়ে ট্রেনিং দেওয়া হয়, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। এর অন্যতম কারণ, অধিকাংশ জিমে সকলকেই একটা ছকে বাঁধা শারীরচর্চা করানো হয়। অথচ প্রতিটি মানুষের শারীরিক গঠন, ক্ষমতা, প্রয়োজনীয়তা আলাদা। তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কিছু দিন জিমে যাওয়ার পরে অনেকেই তা হঠাৎ করে ছেড়ে দেন। চোট, আঘাতের ঘটনাও ঘটে। তাই জিমে গিয়ে এক্সারসাইজ় শুরু করার আগে কিছু বিষয় মাথায় রাখা জরুরি।
অনেক জিমে এক্সারসাইজ়ের একটা গড়পরতা চার্ট ধরিয়ে দেওয়া হয়। যিনি অনেক দিন ধরে ব্যায়াম করছেন, তাঁর হয়তো এতে সমস্যা হবে না। কিন্তু যিনি আনকোরা, তিনি কতটা উপকৃত হবেন সন্দেহ আছে। পার্সোনাল ট্রেনার রেখে জিম করার ট্রেন্ড এখন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে আপনার শারীরিক সমস্যা, কাজের রুটিন, জীবনযাপনের সব কিছু সেই ট্রেনারকে জানানো উচিত। তবেই তিনি আপনার মতো করে এক্সারসাইজ় পরিকল্পনা করতে পারবেন।
ফিটনেস বিশেষজ্ঞ গুরুপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘ব্যায়ামের সামান্য এ দিক ও দিক হলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই জিমে যাওয়ার আগে প্রথমেই বুঝতে হবে, সব ব্যায়াম সকলের জন্য নয়। আমাদের প্রত্যেকের শারীরিক গঠন আলাদা, এমনকি প্রত্যেকের ফিটনেস গোলও ভিন্ন রকমের। কেউ বাড়তি মেদ ঝরানোর জন্য জিমে ভর্তি হন, আবার কেউ শুধুমাত্র কর্মক্ষম থাকার জন্যই ব্যায়াম করেন। কারও উদ্দেশ্য ডায়াবিটিস, ঘাড়-কোমর-পায়ের ব্যথা কমানো, আবার অনেকে চান নায়কোচিত বডি বানাতে। তাই চাহিদা যখন আলাদা, শারীরচর্চার ধরনও আলাদাই হবে। একই ধরনের ব্যায়াম যে সকলের জন্য নিরাপদ, এমনটা মনে করার কোনও কারণ নেই।’’ তাঁর পরামর্শ, জিমে ভর্তি হওয়ার সময়ে কর্তৃপক্ষকে নিজের সুবিধে-অসুবিধে ও চাহিদা স্পষ্ট করে জানানো উচিত।
জেনে রাখুন
জানিয়ে রাখুন
অনেক জিমে ভর্তি হওয়ার আগে একটি ফর্ম পূরণ করতে হয়। তাতে জানাতে হয়, কোনও অসুখ রয়েছে কি না, থাকলে কী অসুখ। শ্বাসকষ্ট, হিস্টিরিয়া, অ্যানিমিয়া, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবিটিস ইত্যাদি কোনও সমস্যা থাকলে আগেভাগেই তা জানিয়ে রাখুন। হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ইত্যাদি আগে হয়ে থাকলে জানিয়ে রাখুন তা-ও। কোমর, পা, হাত... শরীরের কোথাও কোনও হাড় ভেঙে থাকলে তা সম্পর্কেও জানান। গুরুপ্রসাদ বলছেন, “মাঝেমধ্যেই অভিযোগ শোনা যায়, সেই ফর্ম কর্তৃপক্ষ খুঁটিয়ে দেখেন না। তাই এ বিষয়েও নজর রাখুন।”
সাবধান থাকতে
তবে বিশেষজ্ঞের মত না নিয়ে কোনওটাই করবেন না। দরকারে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।