শুরু হয় ত্বক নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। কোনওটা লেগে যায়, কোনওটা কোনও কাজে আসে না। ছবি: সংগৃহীত
কৈশোর থেকেই নানা রকমের ত্বকের সমস্যা শুরু হয় অনেকের। তখন থেকেই তারা ব্রণ, তৈলাক্ত ত্বক, ব্ল্যাকহেড তাড়ানোর উপায় খোঁজ। কিশোর বয়সে নামী-দামি প্রসাধনী কেনার ক্ষমতা সকলে থাকে না। ত্বকের বিশেষজ্ঞদের কাছেও চট করে নিয়ে যেতে চান না বাড়ির লোকেরা। সকলের মুখেই এক কথা, ‘সবই বয়সের দোষ। কয়েক বছর পর সব ঠিক হয়ে যাবে।’ ছেলেমেয়েরা, বিশেষ করে মেয়েরা খানিক বিরক্ত হয়েই অন্য উপায় খোঁজে ত্বকের যত্ন নেওয়া। অনেক সময়ে ঠাকুমা-দিদিমারা নানা রকম টোটকা বাতলে দেন। অনেক সময়ে হয়তো তারা প্রিয় তারকার ‘গোপন টোটকা’র কথা কোনও পত্রিকায় পড়ে বা টিভিতে সাক্ষাৎকারে দেখে। কিংবা কখনও শরণাপন্ন হয় ইউটিউবের। তার পর থেকে শুরু হয় ত্বক নিয়ে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা। কোনওটা লেগে যায়, কোনওটা কোনও কাজে আসে না।
অনেকেই এই টোটকাগুলি চালিয়ে যান বহু বছর। প্রাকৃতির উপাদান দিয়ে রূপচর্চা করা নিঃসন্দেহে ভাল। কিন্তু সব জিনিস সকলের সহ্য না-ও হতে পারে। আবার ঘরোয়া টোটকা মানেই ভাল, তেমনও নয়। অনেক সময়েই আমরা অজান্তে ত্বকের ভালর চেয়ে ক্ষতি বেশ করে ফেলি এ সব দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবহার করে। কিছু টোটকা তো এত দিন ধরে সকলে মেনে এসেছেন যে, সকলে ধরেই নেন, সেগুলি নিরাপদ। কিন্তু খুঁটিয়ে দেখলে হয়তো জানা যাবে, তেমনই আদতে নয়। দেখে নিন রূপচর্চা করার সময়ে যে ভুলগুলি আকছার আমরা করে থাকি।
অনেক সময়েই আমরা অজান্তে ত্বকের ভালর চেয়ে ক্ষতি বেশ করে ফেলি।
১। হলুদ
দই-হলুদের প্যাক যুগ যুগ ধরে ভারতীয় মহিলারা লাগিয়ে আসছেন। প্রিয়ঙ্কা চোপড়াও জানিয়েছেন, তার ঠাকুমা এই প্যাক তাঁকে লাগাতে বলতেন। হলুদ লাগিয়ে গায়ের রং উজ্জ্বল করার রীতিও অনেকেই মেনে চলেন। কিন্তু হলুদ ব্যবহার করার সময়ে অনেকেই নানা রকম ভুল করেন। প্রথমত দুধ সকলের ত্বকে সহ্য হয় না। বিশেষ করে যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তাঁদের দুধ বা দই লাগালে মুখে ব্রণ বেরিয়ে যেতে পারে। তার বদলে নিম-হলুদ লাগালে অনেক বেশি উপকার হবে। খাঁটি হলুদ ত্বকের পক্ষে সত্যিই ভাল। কিন্তু বাজার থেকে যে সব প্যাকেটজাত হলুদের গুঁড়ো কিনি, তার মধ্যে অনেক সময়ে নানা রকম ভেজাল থাকে। স্পর্শকাতর ত্বকের ক্ষেত্রে এগুলি নানা রকম র্যাশ বেরোতে পারে।
২। ভিটামিন ই ক্যাপসুল
মাথার চুল মজবুত করার জন্য নানা রকম হেয়ার প্যাকে অনেকে সময়ই ভিটামিন ই ক্যাপসুল ফাটিয়ে তা মিশিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু ত্বকের চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এ ভাবে ভিটামিন ক্যাপসুল ফাটিয়ে ব্যবহার করার চেয়ে ভিটামিন ই-র গোটা ওষুধ খেয়ে নেওয়া অনেক বেশি উপকারী।
লেবুর রস কখনওই মুখে লাগাতে নেই।
৩। লেবু
ত্বকের পোড়া ভাব দূর করতে অনেক সময়ই লেবুর রস কোনও ফেক প্যাকে মিশিয়ে নেন অনেকে। কিন্তু লেবুর রস কখনওই মুখে লাগাতে নেই। লেবুর অ্যাসিডিক ধরন ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। অকালে ত্বক বুড়িয়ে যাওয়ার পিছনেও থাকে লেবুর প্রভাব।
৪। মুলতানি মাটি
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য মুলতানি মাটির ফেস প্যাক দারুণ কার্যকর। কিন্তু যাঁদের ত্বক এমনিতেই শুষ্ক, মুলতানি মাটিতে তাঁদের চামড়া আরও শুকিয়ে যাবে।
ভিটামিন ক্যাপসুল ফাটিয়ে ব্যবহার করার চেয়ে ভিটামিন ই-র গোটা ওষুধ খেয়ে নেওয়া অনেক বেশি উপকারী।
৫। এসেনশিয়াল অয়েল
নানা রকম এসেনশিয়াল অয়েল দিয়ে মুখ ম্যাসাজ করার নতুন করে চল হয়েছে বেশ কিছু বছর ধরে। খ্যাতনামী থেকে পার্লারের দিদি— সকলেই এসেনশিয়াল অয়েল ব্যবহার করার পরামর্শ দেন। কিন্তু এই তেলগুলি কখনওই সরাসরি ত্বকে লাগানো উচিত নয়। অন্য উপকরণের সঙ্গে মিশিয়ে অবশ্যই লাগাতে পারেন।