ছবি: সংগৃহীত।
ছোটবেলায় পুকুরে সাঁতার কাটতে নেমে পায়ে শৈবালদাম জড়িয়ে গিয়েছিল। তার পর থেকে ভয়ে আর সে মুখো হননি। তবে পুকুরের বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করতে যেমন বিভিন্ন প্রকার মাছ, জলজ প্রাণীর প্রয়োজন রয়েছে, তেমনই প্রয়োজন রয়েছে শ্যাওলার। কিন্তু সেই শ্যাওলা যে ত্বকচর্চার কাজে লাগতে পারে, তা কোনও দিন শুনেছেন কি?
ত্বকের চিকিৎসকেরা বলছেন, ত্বকের নামীদামি প্রসাধনী, রাসায়নিক চিকিৎসাকে গুনে গুনে গোল দিতে পারে এই শৈবালদাম। তবে নদী বা পুকুরে যে ধরনের শ্যাওলা দেখা যায়, মুখে মাখার শ্যাওলা তেমন নয়। এই ধরনের শ্যাওলা সাধারণত সমুদ্রের তলদেশে দেখা যায়। এগুলিকে বলা হয় ‘অ্যালগি’। নীলচে-সবুজ রঙের এই জলজ এককোষী জীব নানা রকম খনিজের উৎস। ত্বকচর্চায় এই জলজ জীব ব্যবহারের প্রচলন বিদেশে ছিলই। কোরিয়া, জাপান, চিনের নানা রকম প্রসাধনীর মতো এই অ্যালগি-যুক্ত প্রসাধনীর কদর এ দেশেও সম্প্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে।
কী এমন আছে ‘অ্যালগি’তে?
ত্বকের চিকিৎসকেরা বলছেন, অ্যালগির মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু ভিটামিন, খনিজ, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। এই সমস্ত উপাদান ত্বকের জন্য ভাল। এ ছাড়াও রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেটিভ উপাদান। যা ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতেও সাহায্য করে। ত্বকের পেলবতা বজায় রাখতে ইদানীং হায়ালুরনিক অ্যাসিড ব্যবহারের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই অ্যাসিড কিন্তু রাসায়নিক নির্ভর। এই অ্যাসিডটির প্রাকৃতিক বিকল্প হতে পারে অ্যালগি।
রূপচর্চা বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ত্বকের বেশির ভাগ সমস্যার নেপথ্যে রয়েছে আর্দ্রতার অভাব। অ্যালগিতে রয়েছে পলিস্যাকারাইড। এই পলিস্যাকারাইড আসলে এক ধরনের কার্বোহাইড্রেট। ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে এই পলিস্যাকারাইডের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। এ ছাড়া অ্যালগিতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, ভিটামিন সি এবং ই, এই তিনটি উপাদান পরিবেশের দূষণজনিত সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে। যাঁদের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক, তাঁদের জন্যও উপকারী বিশেষ এই ‘শ্যাওলা’।
কী ভাবে মাখবেন ‘অ্যালগি’?
মুখে অ্যালগি মাখার সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হল প্যাক বা মাস্ক তৈরি করে মেখে ফেলা। অনলাইনে এখন বিভিন্ন সংস্থার অ্যালগির গুঁড়ো কিনতে পাওয়া যায়। গোলাপজল, অ্যালো ভেরা জেল এবং অ্যালগির গুঁড়ো মিশিয়ে সেই মিশ্রণ মুখে ফেলা যায়। এত ঝক্কি পোহাতে না চাইলে ‘রেডিমেড’ অ্যালগি ফেসপ্যাক কিনে ফেলতে পারেন। মুখে মেখে মিনিট কুড়ি রেখে ধুয়ে ফেলুন।