তিসি বীজ থেকে তৈরি জেল দিয়ে হবে চুলের যত্ন। ছবি: সংগৃহীত।
রুক্ষ চুলের সমস্যা অনেক। একে তো দেখতে ভাল লাগে না, কোনও জেল্লা থাকে না। অন্য দিকে, চুল খোলাও রাখা যায় না। খুব দ্রুত জট পড়ে যায়।
এই সমস্যার সমাধানে বেছে নিতে পারেন তিসি। শরীর ভাল রাখতে স্বাস্থ্যসচেতন মানুষজন খাদ্যতালিকায় তিসি যোগ করেন। তিসির তেল চুলের যত্নেও ব্যবহার হয়। তবে রুক্ষ চুলকে নরম, মসৃণ করে তুলতে মাখতে পারেন তিসির জেল।
তিসির জেল কী?
বীজটি জলে সেদ্ধ করলেই তা থেকে বেরিয়ে আসে প্রাকৃতিক তেল, ফ্যাট। জলের সঙ্গে মিশে তৈরি হয় এক ধরনের ঘন জেল। তিসি বীজ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, প্রোটিন, ম্যাগনেশিয়াম, ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডে পরিপূর্ণ। প্রতিটি উপাদানই চুল ভাল রাখার জন্য বিশেষ কার্যকর। এই জেল মাথার ত্বকে পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে। শীতের মরসুমে চুলে যে আর্দ্রতা কমে যাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়, তার সমাধানও করতে পারে। তিসির বীজে থাকা তেল, ফ্যাটি অ্যাসিড চুলে পুষ্টি জোগায়।
কী কী উপকার?
১. প্রাকৃতিক উপায়ে চুল সোজা করতে চান? তা হলে মাখতে পারেন তিসির জেল। তার সঙ্গে অবশ্য অলিভ অয়েল, ভিটামিন ই মিশিয়ে নিতে পারেন। তিসির জেল চুলকে গভীর ভাবে আর্দ্র করতে সাহায্য করে। ফলে কয়েক মাস তিসির জেল মাখলে চুল ধীরে ধীরে সুন্দর, মসৃণ, সোজা হয়ে উঠবে।
২. তিসিতে থাকা ভিটামিন, খনিজ চুলের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। চুলের বৃদ্ধিতেও তা সহায়ক।
৩. কোঁকড়া চুল বাগে আসে না? ফুলে থাকে? তিসির জেল নারকেল তেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে সপ্তাহে এক থেকে দু’দিন মাখুন। টানা ব্যবহারে কোঁকড়া চুল নরম হবে, জেল্লা ফিরবে।
জেল কী ভাবে তৈরি করবেন?
একটি পাত্রে কিছুটা জল নিয়ে এক মুঠো তিসি বীজ দিয়ে দিন। কম আঁচে ক্রমাগত নাড়তে থাকুন। মিনিট পাঁচেকেই তিসির বীজ থেকে তেল বেরিয়ে তা ঘন হয়ে যাবে। গরম থাকা অবস্থায় কাপড়ের সাহায্যে মিশ্রণটি ছেঁকে নিন। ঠান্ডা হলে সেটি আরও ঘন হয়ে জেলের মতো হয়ে যাবে। জেলটি কাচের বোতলে ভরে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন।
কী ভাবে ব্যবহার করবেন?
শ্যাম্পু ব্যবহারের পর চুল তোয়ালে দিয়ে মুছে ভিজে চুলে জেলটি মেখে মিনিট ৫-১০ রেখে ধুয়ে ফেলতে পারেন।
বানাতে পারেন চুলের প্যাক। তিসির জেলের সঙ্গে ১ টেবিল চামচ অ্যালো ভেরার শাঁস বা জেল, ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল এবং ১টি ভিটামিন ই ক্যাপসুল কাঁচি দিয়ে কেটে তার মধ্যে থাকা তরল মিশিয়ে নিন। শ্যাম্পু করার পর পরিষ্কার চুলে এটি ভাল করে মেখে মিনিট ১৫ মাসাজ করে নিন। তার পর মৃদু শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কয়েক মাস একটানা ব্যবহার করলেই চুলের জেল্লা ফিরবে তো বটেই, সারা বছরই তা বজায় থাকবে।