মেথি কী ভাবে চুলে মাখলে উপকার হবে? শিখে নিন সহজ পদ্ধতি। ছবি: ফ্রিপিক।
চুলের জন্য খুবই ভাল মেথি। অনেকেই বলেন, মেথি বেটে লাগালে বা মেথির তেল তৈরি করে চুলে মাখলে চুল পড়া কমবে। চুলের ঘনত্বও বাড়বে। তবে মেথি সঠিক পদ্ধতিতে ব্যবহার না করলে কিন্তু কোনও লাভই হবে না। তাই চুলের জন্য ঠিক কী ভাবে মেথি ব্যবহার করবেন, তা জেনে রাখা ভাল।
মেথিতে ভিটামিন এ, বি, সি, কে, প্রোটিন, ক্যালশিয়াম, ফসফেট, ফোলিক অ্যাসিড, এবং ফ্ল্যাভনয়েডের মতো অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট আছে, যা চুলের গোড়া মজবুত করে। চুলের পুষ্টির জন্যও জরুরি মেথি। মেথিতে অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান রয়েছে, যা খুশকির হাত থেকে চুলকে রক্ষা করে। মেথি প্রদাহ নাশ করতে পারে, তাই নিয়মিত ব্যবহার করলে মাথার ত্বকে ব্রণ-র্যাশ বা কোনও রকম সংক্রমণ দূরে থাকবে।
মেথি কী ভাবে ব্যবহার করলে উপকার হবে?
মেথি দানা পাউডার
প্রথমে মেথি দানাগুলিকে শুকনো খোলায় ভেজে নিন। সুন্দর গন্ধ বার হলে গ্যাস বন্ধ করে দানাগুলিকে ঠান্ডা করে গুঁড়িয়ে পাউডারের মতো বানিয়ে নিন। এ বার একটি পাত্রে ২ থেকে ৩ চা চামচ নারকেল তেল, আমন্ড অয়েল বা যে কোনও মাথায় মাখার তেল নিয়ে গরম করুন। তাতে মেথি দানা পাউডার মিশিয়ে আরও কিছু ক্ষণ কম আঁচে ফোটান। থকথকে তেল তৈরি হলে নামিয়ে নিন। ঠান্ডা করে শিশিতে ভরে রাখুন।
উপকারিতা: নিয়মিত এই তেল ব্যবহার করলে চুল পড়া, চুলের ডগা ফেটে যাওয়ার মতো সমস্যা কমবে। অকালপক্বতাও দূর হবে। নিষ্প্রাণ, রুক্ষ চুলে জেল্লা ফিরবে কম দিনেই।
মেথি দানার পিউরি
দু’ চা চামচ মেথির দানা সারা রাত জলে ভিজিয়ে রাখুন। নরম হলে সেগুলি মিক্সারে পিষে নিন। মিহি মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। এ বার ২ থেকে ৩ চা চামচ নারকেল তেল বা আমন্ড অয়েল কম আঁচে গরম করে তাতে মেথি বাটা মিশিয়ে দিন। ভাল করে নেড়ে গ্যাস বন্ধ করে ঠান্ডা হতে দিন। এর পর কাচের শিশিতে ভরে রাখুন।
উপকারিতা: মেথির দানায় রয়েছে লেসিথিন নামক উপাদান, যা মাথার ত্বকে পিএইচের ভারসাম্য বজায় রাখে। ফলে চুলের স্বাভাবিক আর্দ্রতা নষ্ট হয় না। চুল রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে পড়ে না। অনেকেরই চুল আঁচড়ানোর সময়ে গোছা গোছা চুল ওঠে। সপ্তাহে অন্তত তিন দিন মেথির এই তেল ব্যবহার করলে সেই সমস্যা দূর হতে পারে।
ভেজানো মেথি
উষ্ণ জলে মেথির দানা ৬-৮ ঘণ্টা বা সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। দানাগুলি নরম হলে পিষে তেল বার করে নিন। এ বার পিষে নেওয়া মেথির দানা ভাল করে ফোটান। গ্যাসের আঁচ কম রাখবেন। এর সঙ্গে যে কোনও ক্যারিয়ার তেল মেশাতে পারেন। চাইলে এসেনশিয়াল অয়েলও মেশানো যায়। কম আঁচে ১০-১৫ মিনিট ফুটিয়ে নিয়ে ঠান্ডা হতে দিন।
উপকারিতা: মাথার ত্বকের চুলকানি, র্যাশ বা ব্রণের সমস্যা থাকলে এই তেল ব্যবহার করতে পারেন। অনেকেরই মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, সেখানে আঁশের মতো চামড়া উঠতে থাকে। সে ক্ষেত্রে এই তেল ব্যবহারে সমস্যা দূর হতে পারে।