রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি। —ফাইল চিত্র।
অস্ট্রেলিয়া সফরে রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিদের খারাপ পারফরম্যান্সের পর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বেশ কিছু কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে। এর মধ্যে তিনটি বিষয়ে একমত নন সৈয়দ কিরমানি। ভারতের ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপজয়ী দলের উইকেটরক্ষক মনে করছেন, রোহিত, কোহলিদের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার দরকার নেই। বিদেশ সফরে ক্রিকেটারদের সঙ্গে স্ত্রীদের যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত নয় বলে মনে করছেন তিনি। একই সঙ্গে তিনি এটাও মনে করছেন, ক্রিকেটারদের অবসরের সিদ্ধান্ত তাঁদের উপরেই ছেড়ে দেওয়া উচিত।
রোহিতদের রঞ্জি খেলা নিয়ে
কোচ গৌতম গম্ভীর মনে করেন ভারতের সব ক্রিকেটারের উচিত ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা। যে নির্দেশ মেনে ঋষভ পন্থ, শুভমন গিলেরা রঞ্জি খেলবেন বলে জানিয়েছেন। রোহিত শর্মা রঞ্জি দলের সঙ্গে অনুশীলন করছেন। বিরাট কোহলির নাম রাখা রয়েছে রঞ্জির প্রাথমিক দলে। কিন্তু সৈয়দ কিরমানি মনে করছেন এই সিদ্ধান্ত ঠিক নয়।
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ়ে হারের পর সমালোচিত হচ্ছে ভারতীয় দল। এর মাঝেই গম্ভীর বলেছিলেন ক্রিকেটারদের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে। কিন্তু কিরমানি বলেন, “আমার মনে হয় না নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা ক্রিকেটারদের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার দরকার আছে। আমাদের সময় এত বেশি ম্যাচ ছিল না। কিন্তু এখন প্রচুর ম্যাচ খেলতে হয়। সেই সঙ্গে যদি ঘরোয়া ক্রিকেটও খেলতে হয়, তা হলে ক্রিকেটারদের চোট পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। সেটা ঠিক হবে না।”
বিদেশ সফরে দলের সঙ্গে স্ত্রীদের যাওয়া নিয়ে
শোনা যাচ্ছে আগামী দিনে বিদেশ সফরে ক্রিকেটারদের স্ত্রীদের থাকতে দেওয়া হবে না। ৪৫ দিনের সফরে হয়তো দু’সপ্তাহ থাকতে দেওয়া হবে তাঁদের। সেটাও ঠিক নয় বলে মনে করছেন কিরমানি। তিনি বলেন, “পরিবার ছেড়ে এত দিন বাইরে থাকলে মানসিক চাপ তৈরি হয়। যে কারণে আমার মনে হয় পুরো সফরেই ক্রিকেটারদের সঙ্গে থাকা উচিত পরিবারের।”
ক্রিকেটারদের অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে
১৯৮৩ সালে প্রথম বার ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতেছিল ভারত। সেই দলের উইকেটরক্ষক ছিলেন কিরমানি। সরকারি ভাবে তিনি কখনও অবসর ঘোষণা করেননি। তাঁর মতে ক্রিকেটারের কবে অবসর নেবেন, তা একেবারেই তাঁদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। কিরমানি বলেন, “রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি দুর্দান্ত ক্রিকেটার। ওরা দেশকে অনেক কিছু দিয়েছে। সেই দুই ক্রিকেটার কবে অবসর নেবেন তা সম্পূর্ণ ভাবে ওদের সিদ্ধান্ত। সেটা নিয়ে বাইরের লোকজনের কথা না বলাই ভাল।”
তরুণ ক্রিকেটারদের উদ্দেশে কিরমানি বলেন, “আমরা বিশ্বকাপ জিতেছিলাম কোচ ছাড়া। খুব ভাল সরঞ্জামও ছিল না। তোমাদের কাছে এখন অনেক কিছু রয়েছে। সেই সব কিছুকে কাজে লাগাও। বড় ক্রিকেটার হতে গেলে প্রয়োজন শৃঙ্খলা, আত্মত্যাগ এবং সংকল্প। কিছু জিনিস মেনে চলতে হবে। মনে রাখবে জীবনে কোনও কিছু অতিরিক্ত মানেই সেটা বিষ। সব কিছুর একটা সীমা থাকা উচিত। সেটা কখনও অতিক্রম করো না।”
বুধবার মোহনবাগান মাঠে এসেছিলেন কিরমানি। ভারতের বিশ্বকাপজয়ী উইকেটরক্ষককে সম্মান জানাল শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব। ১৫ জানুয়ারি চুনি গোস্বামীর জন্মদিন। সেই উপলক্ষে এই দিনটিকে ‘ক্রিকেট ডে’ হিসাবে পালন করবে মোহনবাগান। শুরুটা হল বুধবার কিরমানির হাত ধরে। তাঁকে ক্লাবের আজীবন সদস্য পদ দেওয়া হল। অনুষ্ঠানে মোহনবাগানের প্রাক্তন অধিনায়ক এবং ক্রিকেটারদের সম্মান জানানো হয়। রাজ্যের দুই মন্ত্রী মলয় ঘটক এবং অরূপ রায় উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানে। সেই সঙ্গে প্রাক্তন ক্রিকেটারদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রণব রায়, দেবু মিত্রের মতো ক্রিকেটারেরা। তাঁদের সম্মান জানান ক্লাবের বিভিন্ন কর্তারা। তবে মোহনবাগানের হয়ে খেলা অনুষ্টুপ মজুমদার, মনোজ তিওয়ারি, মহম্মদ শামিরা আসতে পারেননি।