ত্বককে সজীব করে তুলতে শসা অব্যর্থ। ছবি: সংগৃহীত
পুজোর আসতে বাকি আর মাত্র ২৩ দিন। গত দু’বছরের অতিমারি পর্ব পেরিয়ে পুজো নিয়ে এ বার বেশ সাজ সাজ রব। আর হবে না-ই বা কেন? বছরের এই চার-পাঁচটি দিন ঘিরেই তো বাঙালির যত উন্মাদনা। নতুন জামা, সাজগোজ, খাওয়া-দাওয়া, ঘুরতে যাওয়া, পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, রাতভর ঠাকুর দেখা, আরও কত কী! এ দিকে বাড়ি থেকে কাজের মেয়াদও শেষ, তাই কাজের ফাঁকে টুক করে সাঁলো থেকে ঘুরে আসাও সম্ভব নয়। আলোর মালায় শহর সেজে ওঠার আগেই কাজের চাপে হারিয়ে যাওয়া ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ফিরে পেতে ভরসা থাকুক ঘরোয়া উপাদানে।
ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ফিরে পেতে বাজারচলতি যে কোনও পণ্যের উপর ভরসা না করে ত্বকের ধরন অনুযায়ী বেছে নিন ঘরোয়া এই উপাদানগুলি।
তৈলাক্ত ত্বক:
পুজোর আগে সপ্তাহে তিন-চার দিন শসা, অ্যালো ভেরা, বেসন এবং এক চিমটে হলুদের মিশ্রণে তৈলাক্ত ত্বক হয়ে উঠবে নিটোল মুক্তোর মতো। ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে এবং ত্বককে সজীব করে তুলতে শসা অব্যর্থ। কারণ শসার মূল উপাদান হল জল। প্রতি দিনের কর্মব্যস্ত জীবনে খাওয়ার পাতে শসা যেমন শরীরে জলের ভারসাম্য রক্ষা করে, তেমনই ত্বকের উপরিভাগের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনতে পারে এই ফল।
ত্বকের পেলবতা ফিরিয়ে আনতে অ্যালো ভেরার জুড়ি মেলা ভার। এ ছাড়াও, অ্যালো ভেরায় রয়েছে ভিটামিন ই এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। এ সবই হারানো আর্দ্রতা ফিরিয়ে এনে ত্বককে সজীব করে। এতে উপস্থিত কোলাজেন পুড়ে যাওয়া ত্বকের ক্ষত সারিয়ে তোলে। ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে ব্রণ, ফুসকুড়ির হাত থেকে মুক্তি দেয় বেসন।
দিনের যে কোনও সময়ে মুখে গোলাপ জল স্প্রে করা যেতেই পারে। ছবি- প্রতীকী
শুষ্ক ত্বক:
শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা শুষ্ক ত্বকই ভরসা? এ বার মুশকিল আসান হবে মধু, টক দই এবং ওট্মিলের ছোঁয়ায়। এ ছাড়াও মধু হল প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার। ক্লিয়োপেট্রা থেকে কেট উইন্সলেট, প্রতি দিনের রূপচর্চার ক্ষেত্রে সকলেই মধু উপর ভরসা রেখেছেন। মধুর অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান, ত্বকের যে কোনও প্রকারের সংক্রমণ রুখতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও, প্রতি দিন মধু ব্যবহারে ত্বকের যে কোনও দাগ দূর হয়।
রোদে পুড়ে যাওয়া ত্বক থেকে ট্যান তোলার প্রধান অস্ত্র টক দই। পাশাপাশি, শুষ্ক ত্বকে তৈলাক্ত ভাবও বজায় রাখতে সাহায্য করে টক দই।
শুষ্ক ত্বকের প্রধান সমস্যা হল ত্বকের মৃত কোষ বা মরা চামড়া। এই মৃত কোষগুলি না সরিয়ে বাহ্যিক ভাবে যত দামি প্রসাধনীই ব্যবহার করা হোক না কেন, হারানো ঔজ্জ্বল্য ফিরবে না। স্ক্রাবার হিসাবে মধু, টক দই এবং ওট্মিলের প্যাক ব্যবহার করলে পুজোর আগে ত্বক হয়ে উঠবে ঝকঝকে।
স্পর্শকাতর ত্বক:
ঋতুর খামখেয়ালিপনার সঙ্গে খাপ খাইয়ে উঠতে না পেরে ত্বক স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে। এ ধরনের ত্বকের প্রধান সমস্যা হল ত্বকে কিছু ব্যবহার করতে না পারা। সে ক্ষেত্রে গোলাপ জল, কমলালেবুর খোসা এবং হলুদের মতো প্রাকৃতিক উপাদানগুলি ত্বকের এই সমস্যা অনেক অংশেই কমিয়ে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে দিনের যে কোনও সময়ে মুখে গোলাপ জল স্প্রে করা যেতেই পারে। গোলাপ জলে কমলালেবুর খোসা এবং এক চিমটে হলুদের প্যাক মুখে আনবে সোনালি আভা।
পুজোর আগে কয়েকটা দিন ঘরোয়া এই রূপটানে মুখে শ্রাবস্তীর কারুকাজ না হোক, আপনার ওই রূপে জনসমুদ্রে দিশা হারানো নাবিকও বন্দর খুঁজে পাবেন।