শীতের ফ্যাশনে নজর কাড়তে শুধু কাশ্মীরি নয়, বেছে নিতে পারেন রকমারি শাল। ছবি: সংগৃহীত।
শাল মানে সে তো শাড়ির সঙ্গে নেয়। সেকেলে ব্যাপার। এমনটাই ভাবেন অনেকে। কিন্তু রকমারি শাল যে হাল ফ্যাশনের যে কোনও পোশাকের সঙ্গে মানানসই হতে পারে, তা জানেন কি? শাল মানে শুধু কাশ্মীরি বা পশমিনা নয়। বিভিন্ন রাজ্যের শিল্পকলায় তৈরি শালেরও রকমফের হয়। এই সমস্ত শাল শাড়ি, সালোয়ারের পাশাপাশি জিন্স-টপের সঙ্গেও কায়দা করে নেওয়া যায়। শীতে অনেকই শাড়ি বা পোশাকের সঙ্গে মানানসই হবে না ভেবে ঠান্ডায় কাঁপলেও শাল, সোয়েটার পরেন না। তবে রকমারি শাল সংগ্রহে থাকলে এবং সঠিক কায়দায় নিতে জানলে, অনুষ্ঠানে আপনিও হতে পারেন নজরকাড়া।
ইক্কত শাল: ওড়িশার ইক্কত শাড়ি বেশ পরিচিত। ইক্কত হল রং করার এক বিশেষ কৌশল। ইক্কতের নিজস্ব নকশা, ধরন রয়েছে। সেই নকশারই প্রতিফলন দেখা যায় ইক্কত শালেও। যদিও জানা যায়, ইক্কতের রঞ্জন পদ্ধতি ইন্দোনেশিয়ার বয়নশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। সেখান থেকেই এর নামকরণ। তবে ইক্কত শাড়ির জিআই ট্যাগ রয়েছে ওড়িশার হাতে।
শাড়ির ক্ষেত্রে যেমন সুতো দিয়ে তা তৈরি করা হয়, শালে ব্যবহার হয় সূক্ষ্ম পশম। তা রকমারি রঙের হয়। সোনালি উলের শাল যে কোনও জরিপাড় বা সোনালি পাড়ের জাঁকজমকপূর্ণ শাড়ির সঙ্গে মানানসই হতে পারে। বিয়েবাড়িতে সিল্কের সালোয়ারের সঙ্গেও ওড়নার বদলে এমন শাল প্লিট করে বা ছড়িয়ে নিতে পারেন। জিন্স এবং গলাবন্ধ একরঙা টি-শার্টের সঙ্গেও এটি মাফলারের মতো স্টাইলে নিলেও মানানসই হবে।
কলমকারি: কলমের আঁকিবুকিতে নকশা ফুটিয়ে তোলা হয় বলে এর নাম কলমকারি। অন্ধ্রপ্রদেশে রাজ্যেই এই শিল্পকর্মের জন্ম। শোনা যায়, কলমকারি বহু পুরনো শিল্পকর্ম। মহাভারত, রামায়ণের কাহিনি ছবিতে ফুটিয়ে তুলতেই এটি শুরু হয়েছিল। কলমকারি এখন দু’ভাবে হয়। আঁকিবুকিতে যে শিল্প সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয় ‘শ্রীকলাহস্ত’। আবার ব্লক প্রিন্টের মাধ্যমেও ফুটিয়ে তোলা হয় নকশা যা ‘মছলিপট্টনম’ নামে পরিচিত। দক্ষিণের এই রাজ্যে শীত সে ভাবে পড়ে না বলে, নকশা ফুটে ওঠে শাড়িতে, সুতির চাদরে। তবে এখন এই শিল্পকলা বিভিন্ন শালেও ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে।
কাশ্মীরের কানি শাল। ছবি: সংগৃহীত।
কানি শাল: পশমিনার সুতোয় নিখুঁত কারুকাজে ফুল, পাতা ফুটে ওঠে কানি শালে। সেই নকশায় থাকে মুঘল শিল্পধারার ছাপ। তবে এর নামকরণ হয়েছে কানিহামা থেকে। কাশ্মীরের কানিহামাতেই প্রথম তৈরি হত এই ধরনের শাল। এর কারুকাজ যেমন নিখুঁত, তেমনই শ্রমসাধ্য তা বানানো। একটি শাল হাতে বুনতে সময় লাগে ৬-১৮ মাস। স্বাভাবিক ভাবেই ভাল মানের শালের দামও হয় আকাশছোঁয়া।