এমন কিছু ক্যানসার আছে, যা অবাধ যৌনাচারের ফলেই দেখা দেয়। ছবি: আইস্টক।
ক্যানসারের সঙ্গে যৌন জীবনও জড়িয়ে। না, অসুখ হওয়ার পরবর্তী সময়ে নয়, বরং অসুখ ডেকে আনতেও যৌন সম্পর্কের অনেকটা দায় থাকে। এমন কিছু ক্যানসার আছে, যা অবাধ যৌনাচারের ফলেই দেখা দেয়। তাই অসুরক্ষিত ও একাধিক যৌন সম্পর্কে লাগাম পরালে এবং কিছু নিয়ম মেনে চললেএই ধরনের ক্যানসারের আশঙ্কা অনেক কমে যায়।
আবার ক্যানসার হওয়ার পর, এমনকি সেরে যাওয়ার পরও যৌন সম্পর্ক অনেক সময় নেমে আসে তলানিতে। সব সময় যে তার জন্য অসুখ বা চিকিৎসা পদ্ধতি দায়ী থাকে এমন নয়। অজ্ঞতা, কুসংস্কার, ভয়, সব মিলেমিশে বিপদটি ঘটায়। তাতেও বিপর্যস্ত হয় স্বাভাবিক জীবনযাপন। তবে সচেতন হলে এই সব সমস্যা কাটিয়ে ফেলা কঠিন কিছু নয়।
কীভাবে কাটানো যেতে পারে? জানালেন স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডলি চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন: শরীরের ওজন বাড়াচ্ছে ফাস্ট ফুড, পেটের মেদ কমান এই সব উপায়ে
ক্যানসার হলে চেহারা কিছুটা খারাপ হয়। কখনও চুল পড়ে যায়, ত্বকে আসে রুক্ষতা, কখনও বাদ যায় কোনও অঙ্গ। ফলে হীনমন্যতা জাগে রোগীর মনে। কখনও দেখা দেয় অবসাদ। আক্রান্ত মানুষটি নিজেকে গুটিয়ে নেন, দূরে সরে যান। সঙ্গী সাপোর্টিভ না হলে বা তাঁর মনেও যদি অনীহা থাকে, সে ক্ষেত্রে দূরত্ব বাড়ে।
অনেকে আবার ভাবেন ক্যানসার ছোঁয়াচে। বিশেষ করে যৌনাঙ্গে ক্যানসার হলে এই ধারণা আরও পুঞ্জীভূত হয়। ফলে শুধু বিছানা নয়, ঘরও আলাদা হয়ে যায়। এ ছাড়া রয়েছে রোগের কষ্ট, খরচ, ভয় ইত্যাদি। এ সব থেকেও নানা কারণে বাড়ে টেনশন। তার আঁচ এসে পড়ে যৌন জীবনে।
নিয়মিত কেমোথেরাপি হলেও শরীরে এত রকম কষ্ট থাকে যে শারীরিক ইচ্ছেটাই কমে যায়। সহবাসও হয় কষ্টকর। ছেলেদের সাময়িক ইরেক্টাইল ডিসফাংশন হতে পারে। তার উপর মৃত্যুভয় তাড়া করে বেড়ায় এতই যে গোটা পরিবার রোগমুক্তির বাইরে আর কিছুই প্রায় ভাবতে পারে না। রে দিলেও এক ব্যাপার। পেটে ও আশপাশে রেডিয়েশন দিলে বেশি সমস্যা হয়।
আরও পড়ুন: ওজন ঝরিয়ে ছিপছিপে হতে চান? সকালের প্রথম পানীয় হোক এ সব
সমাধান
প্রথমেই মাথায় রাখতে হবে, ক্যানসার কিন্তু মারণ রোগ নয়। আধুনিক চিকিৎসায় অনেক সময়েই ঠিক সময়ে ধরা পড়লে, ক্যানসার সেরে যায়। কেমোথেরাপি হওয়ার ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে শারীরিক ইচ্ছে ও ক্ষমতা ফিরে আসে অধিকাংশ ক্ষেত্রে। তেমনটা না হলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলুন। রেডিয়েশনের পরও একই ব্যাপার। কাজেই ভয় পাবেন না। মানসিক প্রতিবন্ধকতা থাকলে কাউন্সিলিংয়ে ভাল কাজ হয়। মানসিক অবসাদ থাকলে মনোচিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওষুধ খেলে কিছু দিনের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যায়। অবাধ যৌনাচারে লাগাম পরান। ওরাল সেক্সের অভ্যাস থাকলেও সচেতন হতে হবে। কারণ সঙ্গীর যৌনাঙ্গে বিশেষ ধরনের হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস থাকলে তা থেকে ওরো–ফ্যারিঞ্জিয়াল ক্যানসার হতে পারে। হিউমান প্যাপিলোমা ভাইরাসের আক্রমণে জরায়ুমুখ ক্যানসার হওয়া ঠেকাতে সহবাসের সময় কন্ডোম ব্যবহার করুন। একাধিক যৌন সঙ্গী থাকলে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি, কন্ডোম ব্যবহার না করলে সে সম্ভাবনা আরও বাড়ে। কাজেই বাঁচতে গেলে এই স্বভাবে রাশ টানুন। বার গর্ভপাত করালে, ঘন ঘন পিরিয়ড পিছিয়ে দেওয়ার ওষুধ খেলে বা পৌরুষ ধরে রাখার ওষুধের নির্বিচার ব্যবহারেও ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়ে। অতএব সতর্ক হতে হবে এ সবেও।