প্রতীকী ছবি।
হাজার হাজার বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশের হাঁপানির সমস্যা রাতেই বাড়ে। কিন্তু কেন এমন হয়, সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা মেলেনি অনেক দিন পর্যন্তই। কেউ কেউ বলেছেন, রাতে কোনও কাজের মধ্যে থাকে না শরীর, সে কারণেই কষ্ট বাড়ে। কারও বা আবার বক্তব্য, রাতে তাপমাত্রা পড়ে যাওয়ার কারণে এমন হয়। হালের গবেষণা নতুন দিশা দেখাল।
আরও কয়েকটি বিষয়ের কথাও এত দিন উঠে এসেছে এ ক্ষেত্রে। কোন ভঙ্গিতে ঘুমোচ্ছেন রোগী? সেই ঘরটির পরিবেশ কেমন? এ সবের দিকেও খেয়াল রাখতে বলতেন চিকিৎসকরা। ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ঘুমের জায়গার প্রভাব শরীরের উপর পড়ে বলে বক্তব্য ছিল বিশেষজ্ঞদের।
এ নিয়ে নতুন করে গবেষণা শুরু করেছে এক দল চিকিৎসক। বিভিন্ন দেশের হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত তাঁরা। গবেষণায় উঠে এসেছে একটি নতুন তথ্য। তাঁদের বক্তব্য, হাঁপানির সমস্যা বা়ড়ে শারীরিক বিভিন্ন পরিবর্তনের উপর ভিত্তি করে। দিনের এক-এক সময়ে শরীরে এক-এক ধরনের বদল আসে। শ্বাস-প্রশ্বাসের ধরন থেকে হজমের গতি, সবই দিনের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে চলে। তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে মনের ভাব, চলাফেরার ধরনও। একে বলা হয় সার্কাডিয়ান রিদম। যে ছন্দে শরীর ও মন সারা দিন চলে। তার উপরই নির্ভরশীল হাঁপানির কষ্টও। দিন ও রাতে প্রাকৃতিক যে সব বদল ঘটে, তার প্রভাব এ ভাবেই পড়ে শরীরের উপর। এবং এই সকল পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণে রাখে মস্তিষ্কের একটি অংশ।
প্রতীকী ছবি।
এত দিন প্রকৃতির প্রভাব আর রোগীর স্বভাব, এ সব নিয়েই আলোচনা হয়েছে। এই প্রথম হাঁপানির সমস্যায় সার্কাডিয়ান সিস্টেমের প্রসঙ্গ উঠল বলে দাবি করলেন গবেষকদের এক জন, ব্রিগহামের মেডিক্যাল ক্রনোবায়োলজি প্রোগ্রামের অধিকর্তা এজেএল শির।
গবেষকরা দেখেছেন, রাতে যে সকল মানুষের হাঁপানির কষ্ট সবচেয়ে বেশি বাড়ে, তাঁদের অধিকাংশের ফুসফুসের কাজ করার ক্ষমতা কমতে থাকে সে সময়ে। এবং তা মূলত হয় সার্কাডিয়ান রিদমে বদলের প্রভাবে। ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের একটি প্রত্রিকায় এ সংক্রান্ত গবেষণাপত্রে সে কথা প্রকাশ করেছেন চিকিৎসকরা।