মরসুমি মনখারাপ কাটিয়ে ওঠার উপায় বলে দিলেন মনোবিদ। ছবি: সংগৃহীত
‘লোকে কী বলবে’-এর প্রতিটি পর্বে ইতিমধ্যেই অনেকে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিয়েছেন। নিচ্ছেনও। এই অনুষ্ঠানের প্রতিটি পর্বে জীবনের এবং সমাজের এমন কিছু দিক উঠে এসেছে যেগুলি নিয়ে কথা বলা কঠিন। সেই সমস্ত ছুৎমার্গ, সামাজিক চাপ যেখানে অনেক লজ্জা, ভয় জুড়ে আছে সেই সব বিষয় নিয়েই লোকে কী বলবে-এর প্রতিটি পর্বে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু প্রতিটি পর্বের আগে এমন অনেক প্রশ্ন এসেছে যার সঙ্গে শুধু সামাজিক সঙ্কট জুড়ে নেই, আরও অনেক ধরনের বিপন্নতাও থেকে যাচ্ছে। আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভে এসে তেমনই কিছু সমস্যার কথা সরাসরি শুনলেন এবং সমাধান দিলেন মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশুপতি সাহা নামে এক ব্যক্তি মনোবিদের কাছে প্রশ্ন রেখেছিলেন ঋতুকালীন মনখারাপ নিয়ে। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে অনেকের মনেরও বদল ঘটে। আগে থেকে মনে জমা হয়ে থাকা কোনও বিষাদ কি মরসুমি মনখারাপ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে?
‘সিজ়ন্যাল ডিপ্রেশন’ অর্থাৎ ঋতুকালীন মনখারাপের বিষয়টির জন্ম হয়েছিল মূলত শীতপ্রধান দেশে। সেখানে যখনই আলো কমে আসে, ঝিরঝিরে বৃষ্টি, বরফপাত, ভীষণ ঠান্ডা, সেই দীর্ঘ শীতের মাসগুলি একটা অবসাদ চলে আসে। বহু দিন সূর্যের আলো না দেখলে মনখারাপ হতে শুরু করে। এটা যে শুধু মাত্র শীতপ্রধান দেশে সীমাবদ্ধ রয়েছে, তা কিন্তু নয়। শীত পড়লে মনখারাপ বাড়ে আরও অনেক ভৌগোলিক ঠিকানায়।
অনুত্তমার কথায়, ‘‘যদি মনের উপর অন্য কোনও খারাপ লাগার আদৌ কোনও ইতিহাস না থাকে তাহলে কোনও কোনও দিন মন একটু খারাপ হতে পারে। মেজাজের পরিবর্তন হতে পারে। কিন্তু অবসাদ হওয়ার কথা নয়। যদি দেখা যায় বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে অবসাদ গ্রাস করছে, বিছানা থেকে ওঠার ক্ষমতা নেই, উত্তেজনা স্তিমিত হয়ে আসছে, এটা দীর্ঘ দিন ধরে থাকছে সে ক্ষেত্রে কিন্তু মনোবিদের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন। শীতকালে এমনিতে একটু বিরক্তি আসে। সেই সাময়িক বিরক্তি কিন্তু অবসাদ নয়। মন কোনও এক দিন খারাপ থাকা মানেই, তা অবসাদ বলে ধরে নেওয়ার কিছু নেই। স্থায়িত্ব দিয়ে দেখা প্রয়োজন। তীব্রতা দিয়ে দেখতে হবে। মনকে কতটা আচ্ছন্ন করে রেখেছে সেটাও মাপা জরুরি। চেষ্টা করেও যদি মনকে চাঙ্গা করতে না পারা যায় তখন সেটা অবসাদ বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে।’’