সোনার মাস্ক! ফেসবুক থেকে নেওয়া।
গোঁফের আমি, গোঁফের তুমি, গোঁফ দিয়ে যায় চেনা। করোনা সংক্রমিত দুনিয়ায় এই বচন খানিক বদলে নিয়ে বলা যেতেই পারে, মাস্ক দিয়ে যায় চেনা! অতিমারির বাড়াবাড়িতে যখন মাস্ক হয়ে উঠেছে পরিচ্ছদের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ, তখন তাকে হেলাফেলা করা কখনওই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। জামা কিংবা শাড়ির মতোই এখন মাস্কের বাজারেও হাজারো বিকল্প। কোথাও আঁকিবুকি কাটা মাস্ক বিকোচ্ছে দেদারে, আবার কোথাও বাহারি মাস্কে নিজের মুখেরই প্রতিচ্ছবি। কিন্তু এই সব কিছুকে ছাপিয়ে গিয়েছে বাটানগরের ‘সোনার মাস্ক’!
সম্প্রতি নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে কতগুলো ছবি। সোনার তৈরি মাস্কের। মাস্কের আদলে সোনার চকমকি দেখে নেট পাড়ার জনগণের চোখে ধাঁধা লাগার জোগাড়। ছবি দেখে আনন্দবাজার অনলাইন যোগাযোগ করে মাস্কের স্রষ্টার সঙ্গে। তিনি বজবজের গয়না ব্যবসায়ী চন্দন দাস। তাঁর দোকানেই তৈরি হয়েছে এমন চোখ কপালে তোলা মাস্ক।
আনন্দবাজার অনলাইনকে চন্দনবাবু জানালেন, পুজোর আগে এরকম সোনার মাস্ক তৈরি করে দেওয়ার একটি বায়না পেয়েছিলেন তিনি। ১৫ দিন সময় লেগেছে ১০৫ গ্রাম ওজনের মাস্কটি তৈরি করতে। চোখ ধাঁধানো মাস্কটি বিক্রি হয়েছে ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকায়। কিনেছেন কলকাতার এক ব্যক্তি। দেড় দশকের গয়না ব্যবসায়ী চন্দনবাবু নিজেই জানালেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত এ রকম মাস্ক তৈরির আর কোনও অর্ডার পাইনি। শুধু সোনার মাস্কই নয়, এমন অনেক ডিজাইন আমরা বানাতে পারি যা দেখলে অবাক হয়ে যেতে হবে।’’ তিনি বলেন, ‘‘খালি এই মাস্কটি পরলে হবে না। প্রথমে পরতে হবে একটি হলুদ সার্জিক্যাল মাস্ক। তার উপর পরতে হবে সোনার মাস্কটি। তবেই করোনা থেকে পুরোপুরি নিরাপদ থাকবেন আপনি।’’
এই মাস্কের ছবি ছড়িয়ে পড়তেই উঠতে শুরু করেছে হাজারো প্রশ্ন। বিপুল বৈষম্যের দেশ ভারতে অতিমারির মারে যেখানে সকলে দু’বেলার খাবার জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছে, তখন এমন চোখ কপালে তোলা বৈভবের প্রদর্শনের কী প্রয়োজন? আবার উল্টো মতের পথিকও আছেন। তাঁদের দাবি, কোনও ব্যক্তি নিজের ব্যবহারের জন্য কিংবা প্রিয়জনকে উপহার দিতে এই মাস্ক কিনতেই পারেন। তাতে আপত্তির জায়গা কোথায়?
সব মিলিয়ে সোনার মাস্ককে ঘিরে জমে উঠেছে তর্কের প্লাবন।