Hathras Case

হাথরস নিয়ে রিপোর্টে বিদ্ধ যোগী সরকার

সিবিআই সূত্রে জানানো হয়েছে, চার জন অভিযুক্তের একজন নাবালক। তার স্কুলের কাগজপত্র থেকে এই তথ্য পাওয়া দিয়েছে। সিবিআইয়ের দাবি, উত্তর প্রদেশ পুলিশের তদন্তে ফাঁক থেকে গিয়েছিল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২০ ০৪:৩৩
Share:

যোগী আদিত্যনাথ। ফাইল চিত্র।

হাথরস মামলায় অভিযুক্তদের আড়াল করে, গোটা বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য উত্তরপ্রদেশ সরকার প্রবলভাবে সক্রিয়। আজ মেধা পাটকরের নেতৃত্বাধীন তথ্যসন্ধানকারী দল (হাথরসের ধর্ষণকাণ্ড এবং হত্যার) তাদের রিপোর্টে এ কথা জানিয়েছে।

Advertisement

পাশাপাশি একই দিনে হাথরসের কাণ্ডে উত্তরপ্রদেশের পুলিশের দেওয়া বক্তব্যের বিরোধিতা করার জন্য জওহরলাল নেহরু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিফ মেডিক্যাল অফিসার আজিম মালিককে সরিয়ে দেওয়া হল বলে অভিযোগ। ওই ডাক্তার বিবৃতি দিয়েছিলেন, ১৪ অক্টোবর হাথরসে ঘটনাটি ঘটার ১১ দিন পরে নমুনা নেওয়া হয়েছে। সেই নমুনার ভিত্তিতে ফরেন্সিক সায়েন্স লাইব্রেরির রিপোর্ট, নমুনায় কোনও বীর্যের সন্ধান পাওয়া যায়নি। রাজ্যের পুলিশ কর্তা এই রিপোর্টের ভিত্তিতে জানিয়েছিলেন এটি ধর্ষণের ঘটনা নয়। কিন্তু আজিম মালিকের বক্তব্য ছিল, ১১ দিন পরে নেওয়া নমুনার কোনও গুরুত্বই নেই। ঘটনার ৯৬ ঘন্টার মধ্যে নমুনা নেওয়া উচিত ছিল। আজ আজিমকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, তাঁকে অবিলম্বে এই হাসপাতালের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে।

সিবিআই সূত্রে জানানো হয়েছে, চার জন অভিযুক্তের একজন নাবালক। তার স্কুলের কাগজপত্র থেকে এই তথ্য পাওয়া দিয়েছে। সিবিআইয়ের দাবি, উত্তর প্রদেশ পুলিশের তদন্তে ফাঁক থেকে গিয়েছিল।

Advertisement

আজ সমাজকর্মী মেধা পাটকর, ম্যাগসাইসাই বিজেতা সন্দীপ পাণ্ডে, তথ্যের অধিকার সংক্রান্ত আন্দোলনকারী মনি মালা-সহ মোট ন’জনের একটি দল সাংবাদিক বৈঠক করে তাদের হাথরস রিপোর্ট পেশ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, ‘‘নির্যাতিতার বাবাকে হাথরসের জেলাশাসক যে ভাবে প্রশ্ন করেছিলেন, তা থেকে স্পষ্ট সরকার এই মামলা ধামাচাপা দিতে মরিয়া। নির্যাতিতার বাবার উত্তর ঠিক ভাবে না শুনে, ওই ঘটনার পরের দিনই তাঁকে নির্দেশ দেওয়া হয় চিকিৎসা এবং তদন্ত নিয়ে সরকারের দাবি তাঁরা যেন মেনে নেন। তবে সমাজকর্মী এবং সংবাদমাধ্যমের সক্রিয়তার কারণে অবশেষে সত্য সামনে আসতে থাকে।’’

মেধা পাটকরের বক্তব্য, গোটা ঘটনাক্রম এমনভাবে বেঁকে চুরে গিয়েছে যা বিস্ময়কর। তাঁর কথায়, “যে ভাবে সমস্ত সরকারি কর্মচারী এবং সংগঠন এই মামলায় যুক্ত হয়ে তাকে নিজেদের মত করে সাজিয়েছে তাতে এটা বুঝতে বাকি থাকছে না যে যোগী সরকার অপরাধীকে বাঁচাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’’ তাঁরা কথা বলে জেনেছেন, ওই নির্যাতিতাকে ৬ মাস ধরে অভিযুক্তরা নজরে রাখছিল এবং জোরজবরদস্তি করে তার উপর অত্যাচারের চেষ্টা করে গিয়েছে। মেয়েটি তাদের ঠেকিয়ে রেখেছিল এত দিন। মেধার দাবি, ‘‘গোটা বিষয়টিই উচ্চবর্ণের পুরুষপ্রধান সমাজের, পীড়িত দলিত নারীর উপর অত্যাচারের কাহিনি।’’ উত্তরপ্রদেশে রোজ এমন ঘটনা ঘটে চলেছে বলেই মনে করেন তিনি।

উত্তরপ্রদেশের পুলিশ সম্পর্কে বিশদে অভিযোগ তোলা হয়েছে এই রিপোর্টে। বলা হয়েছে, ‘‘এ ব্যাপারে কোনও সন্দেহ নেই যে ওই রাজ্যের পুলিশ অত্যন্ত সন্দেহজনক আচরণ করেছে। যথেষ্ট বিষাক্ত ছিল তাদের গতিবিধি। দেহটিকে ডিজেল দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার পরে বলা হয়েছিল, হিংসা এড়াতে নাকি ওই কাজ করা হয়েছে। এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement