ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন ‘না খাউঙ্গা, না খানে দুঙ্গা’। অর্থাৎ তিনি ঘুষ খাবেন না, ঘুষ খেতেও দেবেন না। অথচ তাঁর দলেরই নেতা তথা উত্তরপ্রদেশের জলশক্তি ও খাদ্যমন্ত্রী স্বতন্ত্র দেব সিংহ রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকদের বলেছেন, টাকা রোজগার করুন ‘ঠিক আছে’। কিন্তু পুরো টাকা নিজের পকেটে ভরবেন না। বিরোধীরা বলছেন, প্রকাশ্যেই ঘুষ খাওয়ার পক্ষে সওয়াল করছেন উত্তরপ্রদেশের ওই মন্ত্রী। বিরোধী দলনেতা অখিলেশ যাদবের অভিযোগ, যোগী সরকারের আমলে দুর্নীতি কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে, এটা তারই নমুনা মাত্র।
মন্ত্রী স্বতন্ত্র দেব গত কাল উত্তরপ্রদেশের গরৌঠা অঞ্চলে সেচের কাজ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখানে সেচের কাজ দেখে রীতিমতো ক্ষুদ্ধ তিনি। স্বতন্ত্র দেব বলেন, ‘‘টাকা রোজগার করা কোনও খারাপ কাজ নয়, কিন্তু পুরো টাকা নিজের পকেটস্থ করা অন্যায়।’’ সেচের কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশের পরে তিনি বলেন, ‘‘গরিব চাষিরা যাতে সেচের জল পান, তা নিশ্চিত করাই সরকারের লক্ষ্য।’’
প্রশাসনের আধিকারিকেরা মন্ত্রীকে জানান, কাজের পরিবর্তে ‘ঘুষ খাওয়া হয়েছে কিনা’, তা নিয়ে তদন্ত করুন তিনি। স্বতন্ত্রদেব অবশ্য তা উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘কীসের তদন্ত? আমি তো দেখতেই পাচ্ছি, কোটি কোটি টাকা এসেছে, কিন্তু খাল সংস্কারের কাজ হয়নি। অপরিষ্কারই হয়ে রয়েছে।’’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একটা বড় অংশের মতে, মন্ত্রী স্বতন্ত্রদেবের মন্তব্যে জোড়া অস্বস্তিতে পড়েছে যোগী আদিত্যনাথ সরকার তথা বিজেপি। কারণ বিরোধীরা অভিযোগ করছেন, উত্তরপ্রদেশকে ‘উত্তম’প্রদেশ করার স্লোগান দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। এই ‘উত্তম’প্রদেশের নমুনা! যেখানে মন্ত্রী সরাসরি ‘ঘুষ নিতে’ বলছেন। তাঁদের অভিযোগ, মন্ত্রীর বক্তব্যের মূল কথা হল, ‘ঘুষ খাওয়ায় বা প্রকল্পের টাকা লোপাট করে দেওয়ায় তেমন কোনও অন্যায় নেই, কিন্তু আধিকারিকেরা যেন পুরো টাকা নিজেদের পকেটে না ভরেন’।
একই সঙ্গে রাজ্যে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না সেই অভিযোগেও সরব হয়েছেন বিরোধীরা। স্বতন্ত্রদেবের মন্তব্যের একটি ভিডিয়ো পোস্ট করে অখিলেশের টুইট, ‘বিজেপি মন্ত্রীর বক্তব্য শুনুন। কী ভাবে কাজ ছাড়াই দুর্নীতি হচ্ছে। কাজ না করেই প্রকল্পের রবাদ্দ টাকা লোপাট হয়ে যাচ্ছে’।