দিল্লিতে বন্যা পরিস্থিতি। —ফাইল চিত্র।
দিল্লিতে ভয়াবহ হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি। বাড়ছে পানীয় জলের সঙ্কট। দিল্লির বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়াল হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস। এর মধ্যে শুক্রবার তিন বালকের মৃত্যু হল দিল্লির মুকুন্দপুরচকে। জল থইথই রাস্তায় খেলতে নেমেছিল তারা। আচমকা ভেসে যায় তিন জনই। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতদের নাম পীযূষ (১৩), নিখিল (১০) এবং আশিস (১৩)। জাহাঙ্গিরপুরির এইচ ব্লক এলাকার বাসিন্দা ছিল তারা। শনিবার তিন জনের দেহ উদ্ধার হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাস্তার জমা জলে স্নান করতে নামে তিন নাবালক। আচমকা জল বেড়ে যাওয়ায় তিন জন ডুবে যায়। শনিবার তাদের দেহ উদ্ধার হয়েছে।
গত কয়েক দিনে বৃষ্টিতে যমুনা নদীর জলস্তর বেড়েছে। তাতে ওয়াজ়িরাবাদ, ওখলা এবং চন্দ্রবাল— দিল্লির প্রধান তিন জল পাম্পঘর ভাসিয়ে দিয়েছে। পাম্পঘরের অন্যান্য যন্ত্রপাতি ডুবে যাওয়ায় তিনটি শোধনাগারই বন্ধ। রাজধানী দিল্লির পানীয় জলের সরবারহ মূলত এই তিন জায়গা থেকে হয়। ফলত রাজধানী জুড়ে পানীয় জলের অভাব দেখা গিয়েছে। এর মধ্যে আবহাওয়া দফতরের পূর্বভাস, আগামী ৪-৫ দিন ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে রাজধানী দিল্লিতে। খাল, নালা ইত্যাদি এমনিতেই বন্যার জলে পরিপূর্ণ। তার মধ্যে এই বৃষ্টির পূর্বাভাসে চিন্তা বাড়ছে প্রশাসনের। শনিবার হলুদ সতর্কতা জারি হয়েছে দিল্লিতে। যার অর্থ, আরও খারাপ হতে পারে বন্যা পরিস্থিতি।
ইতিমধ্যে বন্যা-বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে প্রশাসন। যদিও এখনও বহু এলাকায় বাড়িঘর জলের তলায়। সেই সব জায়গায় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী কাজ করছে। বেশ কিছু জায়গায় সেনাকর্মীরাও উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছেন। দিল্লি প্রশাসনের দেওয়া একটি তথ্য অনুযায়ী, ইতিমধ্যে ২৫,৪৭৮ জনকে বন্যাবিধ্বস্ত এলাকা থেকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দিল্লি সরকার জানাচ্ছে, ২২ হাজার ৮০৩ জনকে ত্রাণ এবং আশ্রয় শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৬টি দল বন্যা-বিধ্বস্ত এলাকাগুলিতে উদ্ধারকাজ করছে।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল জানান যমুনা ব্যারেজের পাঁচটি গেটে কাজ চলছে। যাতে আবার ব্যারেজের দিকে জল পাঠানো যায়, সেই কাজ চলছে। তিনি বলেন, ‘‘যমুনার জলস্তর ক্রমাগত বাড়ছে। যদি আর বৃষ্টি না হয়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। তবে আবার বৃষ্টি শুরু হলে পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটু সমস্যা হতে পারে।’’