প্রতীকী ছবি।
এমসের ৫০ জনেরও বেশি স্বাস্থ্যকর্মীর কোভিড পজিটিভ ধরা পড়েছে গত ৪৮ ঘণ্টায়। ফলে এই ইনস্টিটিউটে চিকিত্সক, নার্স, মেস কর্মী, টেকনিশিয়ান, সাফাইকর্মী এবং নিরাপত্তারক্ষী মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যাটা বেশ উদ্বেগজনক জায়গায় পৌঁছেছে। ইতিমধ্যেই ১৯৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গত দু’দিনের মধ্যে যাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন সেই তালিকায় রয়েছেন এক জন ডাক্তারি পড়ুয়া, তিন জন রেসিডেন্ট চিকিত্সক, ৮ জন নার্স এবং ৫ জন মেস কর্মী। এ ছাড়াও রয়েছেন ল্যাবরেটরির কর্মী, টেকনিশিয়ান, সাফাইকর্মী এবং নিরাপত্তারক্ষী।
করোনার চিকিত্সা করতে গিয়ে একের পর এক স্বাস্থ্যকর্মী সেই করোনাতেই আক্রান্ত হয়ে পড়ায় স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এমস-এর রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক, চিকিত্সক শ্রীনিবাস রাজকুমার টি। তাঁর অভিযোগ, সংক্রমণের থেকে বাঁচতে স্বাস্থ্যকর্মীরা পর্যাপ্ত সুরক্ষা পাচ্ছেন না। ফলে সহজেই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। হস্টেল চত্বরের সুরক্ষা, জীবাণুমুক্তকরণে অব্যবস্থা, কোয়রান্টিন সঠিক পদ্ধতি না থাকা এবং পর্যাপ্ত পরীক্ষা—সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গত মার্চ থেকে বার বার জানিয়েও লাভ হয়নি বলে দাবি শ্রীনিবাসের।
এই বিষয়গুলোই শুধু নয়, সংক্রমণ ছড়ানোর শুরু থেকেই সঠিক মানের এন ৯৫ মাস্ক এবং পিপিই কিট পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ এমসের স্বাস্থ্যকর্মীদের। এ প্রসঙ্গে শ্রীনিবাস বলেন, “আন্তর্জাতিক মানের মাস্ক তো দূর অস্ত্, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বেঁধে দেওয়া মান অনুযায়ী এন ৯৫ মাস্কও পাচ্ছেন না স্বাস্থ্যকর্মীরা।”
আরও পড়ুন: লকডাউন আরও বাড়বে? ঘোষণা হতে পারে কাল, বৈঠক সারলেন মোদী-অমিত
আরও পড়ুন: চিন নিয়ে মোদীর সঙ্গে কোনও কথাই হয়নি ট্রাম্পের, জানাল সরকারি সূত্র
করোনাভাইরাসের চেয়ে সরকারের উদাসীনতাকেই বেশি ভয় পাচ্ছেন তাঁরা। এমনটাই জানিয়েছেন দিল্লি এমস-এর স্বাস্থ্যকর্মীরা। শ্রীনিবাস বলেন, “করোনা নয়, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি সরকার এবং এমস কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাই বেশি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “এ রকম যদি চলতে থাকে তা হলে রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার মতো আর কর্মী থাকবে না।”
কোভিডে আক্রান্ত হয়ে তিন দিন আগেই মৃত্যু হয়েছে এমসের স্যানিটেশন বিভাগের প্রধানের। গত সপ্তাহে মৃত্যু হয় ওই ইনস্টিটিউটেরই এক মেস কর্মীর। করোনার চিকিত্সা করতে গিয়ে নিজেরাই আক্রান্ত হয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন এমসের স্বাস্থ্যকর্মীরা।
দিল্লিতেও হ হু করে সংক্রমণ বাড়ছে। ইতিমধ্যেই সাড়ে ১৬ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে আক্রান্তের সংখ্যা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। এমসে করোনার চিকিত্সা চলছে। জয়প্রকাশ নারায়ণ ট্রমা সেন্টারকে কোভিড রোগীদের চিকিত্সার জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে। কিন্তু যে হারে এমসের স্বাস্থ্যকর্মীরাও আক্রান্ত হচ্ছেন তাতে ব্যাপক উদ্বেগ ছড়িয়েছে চিকিত্সক, নার্স-সহ এই পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত কর্মীর মধ্যে।