১০ দিন ধরে উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে ৪১ জন শ্রমিক। — ফাইল চিত্র।
তিনি ভাল রয়েছেন। দুশ্চিন্তা না করে সময় মতো যেন খেয়ে নেন তাঁর মা। উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গ থেকে দূর বাংলায় মাকে এই বার্তাই পাঠালেন আটক শ্রমিক। অন্য এক শ্রমিক সুড়ঙ্গ থেকে কথা বললেন ভাইয়ের সঙ্গে। জানালেন, ভাল রয়েছেন তাঁরা।
১০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও উত্তরখণ্ডের সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গে আটক ৪১ জন শ্রমিক। তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে জোরকদমে। এর মধ্যেই মঙ্গলবার সকালে ৬ ইঞ্চি পাইপলাইনের মাধ্যমে আটক শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পেরেছে প্রশাসন। অনেকেই কথা বলেছেন পরিবারের সঙ্গে। সুড়ঙ্গ থেকে বার্তা পাঠিয়েছেন বাংলার শ্রমিক জয়দেব। সুপারভাইজারকে তিনি বলেন, ‘‘অনুগ্রহ করে রেকর্ড করে নেবেন। আমি আমার মাকে কিছু বলতে চাই। মা দুশ্চিন্তা কোরো না। আমি ঠিক আছি। সময়ে খেয়ে নেবে। বাবাকেও সময়ে খেয়ে নিতে বলবে।’’ জবাবে সুপারভাইজার বার বার আটক শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেছেন। জানিয়েছেন, শীঘ্রই তাঁদের উদ্ধার করা হবে। জয়দেব কোন জেলার, সে বিষয়ে বিশদ জানা যায়নি।
সুড়ঙ্গে আটক আর এক শ্রমিক পুষ্কর সিংহ কথা বলেন নিজের ভাই বিক্রম সিংহের সঙ্গে। কী কথা হয়েছে, পরে একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন বিক্রম। তিনি বলেন, ‘‘ও জানিয়েছে, সুরক্ষিত রয়েছে। বাবা-মায়ের কথাও জিজ্ঞেস করেছে।’’ উদ্ধারকারীরা পাইপের মাধ্যমে এন্ডোস্কোপিক ফ্লেক্সি ক্যামেরা সুড়ঙ্গের ভিতর পাঠিয়েছিলেন। তাতেই আটকে পড়া শ্রমিকদের ভিডিয়োটি ধরা পড়েছে। সোমবার নতুন পাইপের মাধ্যমে সুড়ঙ্গের ভিতর পাঠানো হয়েছে একটি মোবাইল ফোন এবং চার্জার। তার মাধ্যমে বাইরে প্রশাসন এবং পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন শ্রমিকেরা। পাইপ দিয়ে সোমবার শ্রমিকদের কাছে খিচুড়ি, ডালিয়া এবং নানা রকম ফলও পাঠানো হয়েছে।
আটক শ্রমিকদের উদ্ধার নিয়ে উদ্বেগে প্রশাসন। এর মধ্যে আটক ৪১ জনের সুরক্ষার জন্য যজ্ঞের আয়োজন করেছে জম্মু ও কাশ্মীরের বজরং দল। ঘটনাস্থলে উপস্থিত আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ দল। সুড়ঙ্গের অন্তত ৬০ মিটার গভীরে শ্রমিকেরা আটকে আছেন। এখনও পর্যন্ত মাত্র ২৪ মিটার খোঁড়া গিয়েছে। নানা দিক থেকে ধ্বংসস্তূপ খোঁড়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পাশ থেকে সম্ভব না হলে উপর দিক থেকেও মাটি খুঁড়ে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করা হবে। শ্রমিকদের উদ্ধার করতে আরও চার থেকে পাঁচ দিন লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা।