অসমে বিয়ে, এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়ে বিপাকে পশ্চিমবঙ্গ-মেঘালয়ের মেয়েরা

কোচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলা থেকে অসমের বিভিন্ন জেলায় বিয়ে হয়ে আসা মহিলাদেরও অনেকের নাম বাদ পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:০৪
Share:

ছবি: পিটিআই।

উত্তরবঙ্গ ও মেঘালয় থেকে বিয়ে হয়ে অসমে ঘর বাঁধা অনেক মহিলার নামই এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। জানা যাচ্ছে না আসল কারণ। এনআরসি দফতর সূত্রে বলা হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গ বা মেঘালয়ের পুলিশ নথিপত্র সময় মতো যাচাই করে পাঠায়নি। যদিও মেঘালয়ের পুলিশ জানাচ্ছে, নাম যাচাই করে পাঠানো হয়েছে, এমন অনেক মহিলার নামও বাদ গিয়েছে। সমস্যা মূলত ধুবুড়ি, কোকরাঝাড়, দক্ষিণ শালমারা, মানকাচর, গোয়ালপাড়া জেলায়।

Advertisement

কোচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলা থেকে অসমের বিভিন্ন জেলায় বিয়ে হয়ে আসা মহিলাদেরও অনেকের নাম বাদ পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে দুই বোনের বিয়ে গুয়াহাটিতে হলেও একই বাবার লেগাসির ভিত্তিতে এক জনের নাম এসেছে, অন্য জনের বাদ। গুয়াহাটির রুনা সরস্বতীর বাপের বাড়ি জলপাইগুড়ির কদমতলায়, ফতেমা খাতুন, হাসিনা বেগমদের বাপের বাড়ি কোচবিহারের তুফানগঞ্জে। তাঁদের কারও নাম এনআরসিতে নেই। কোকরাঝাড়, গোঁসাইগাঁও, শ্রীরামপুর এলাকার বাঙালি পরিবারগুলিতে নাম বাদ পড়ার সংখ্যা অনেক। অসম সরকার দাবি করেছিল, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তরফে তথ্য যাচাই হয়ে না-আসার ফলেই বাঙালিরা বাদ পড়েছেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, ১৯৬৮ সালে জলপাইগুড়িতে বন্যা ও ১৯৭৪ সালে কোচবিহার জেলাশাসকের তথ্য সংগ্রাহলয়ে আগুন লাগায় পুরনো অনেক নথিপত্র নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তাই অনেকে সার্টিফায়েড কপি চেয়ে পাননি। জেলা প্রশাসনের কেউ মুখ খুলতে না-চাইলেও, স্থানীয় প্রবীণেরা জানাচ্ছেন, ঠিক এমনটাই ঘটেছে।

গারো পাহাড়ের রাজাবালার বিধায়ক আজাদ জামানের দাবি, বিষয়টি নিয়ে মেঘালয় সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জমা দেওয়া হোক। জামানের অভিযোগ, “প্রথম তালিকায় পুলিশ ভেরিফিকেশনে গাফিলতি ছিল মানা যায়। কিন্তু তার পর অসম ও মেঘালয় প্রশাসন বৈঠক করে। মেঘালয় পুলিশ অসমে বিয়ে হওয়া জনজাতিভুক্ত ও অ-জনজাতীয় মহিলাদের তথ্য যাচাই করে এবং তা কাউন্টার সাইন করে তবে পাঠিয়েছে। কিন্তু যে সব মহিলা বংশানুক্রমে মেঘালয়ের বাসিন্দা বলে পুলিশ জানিয়েছিল তাঁদের নামও চূড়ান্ত তালিকায় বাদ পড়েছে।” তাঁর আশঙ্কা, ওই মহিলারা ফরেনার্স ট্রাইবুনালে একই নথিপত্র জমা দেবেন। তারা ফের নথিগুলি বাতিল করে তাঁদের বিদেশি তকমা দেবে।

Advertisement

গারো ছাত্র সংগঠনের সভাপতি টেংসাক গাবিল মোমিন বলেন, “এনআরসির নামে জনজাতির মানুষ, মহিলা ও বয়স্কদের খামোকা হেনস্থা করা হচ্ছে।” মানবাধিকার সংগঠন অ্যাকডো দাবি করে, নাম বাদ পড়া মহিলাদের সাহায্য করতে মেঘালয় সরকার আইনি সাহায্য দিক। বিষয়টি তোলা হোক বিধানসভায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement