প্রতীকী ছবি।
স্মার্টফোনের অভাবে বাড়ির মেয়েটি ক্লাসই করতে পারছে না। কারণ একটি স্মার্টফোন থাকলে তা বাড়ির পুত্রসন্তানের হাতে ক্লাস করার জন্য তুলে দেওয়া হচ্ছে। এ দিকে স্কুলের ফি-ও দিতেই হচ্ছে প্রতি মাসে। খরচ বাঁচাতে গিয়ে
অনেক পরিবারই কোভিডের সময় মেয়েদের স্কুল ছাড়িয়ে দিয়েছেন। কোভিডের সময় ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের পড়াশোনার উপরে বেশি ধাক্কা লেগেছে বলে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রক আশঙ্কা করছে। মহিলাদের ক্ষমতায়ন বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রক সংসদীয় কমিটিতে জানিয়েছে, কোভিড ও লকডাউনের ফলে স্কুল বন্ধ থাকায় দেশের প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষায় ৩২ কোটি ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনায় ধাক্কা লেগেছে। এর মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ১৫.৮ কোটি। ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীদের পড়াশোনায় অতিমারি বেশি ধাক্কা দেবে বলে আশঙ্কা বাড়ছে। পরে দেখা যাতে পারে, বহু মেয়ে পাকাপাকি ভাবে স্কুল ছেড়ে দিয়েছে।
কেন এই আশঙ্কা? শিক্ষা মন্ত্রকের বক্তব্য, ডিজিটাল মাধ্যমে পড়াশোনায় লিঙ্গবৈষম্যের দিকটি অগ্রাহ্য করার উপায় নেই। পরিবারে একটিই স্মার্টফোন থাকলে বাড়ির ছেলেই তা পাবে। পরে সময় মিললে বাড়ির মেয়েটি তা হাতে পেতে পারে। খুবই গরিব পরিবারের মেয়েদের কাছে স্মার্টফোন না থাকা, স্কুল-হস্টেল বন্ধ থাকা, তা খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা, মেয়েদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে বড় মাপের চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে। সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান হিনা গাভিট বলেন, ‘‘মেয়েদের পড়াশোনায় ঠিক কত খানি ধাক্কা লেগেছে, তা আমরা এ বার খতিয়ে দেখব।’’
শিশুকন্যাদের বাঁচানো ও তাদের শিক্ষার জন্যই মোদী সরকার ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্প চালু করেছিল। কিন্তু সংসদীয় স্থায়ী কমিটি রিপোর্টে জানিয়েছে, প্রকল্পের প্রায় ৭৯ শতাংশ অর্থ খরচ হয়েছে স্রেফ বিজ্ঞাপন ও প্রচারে। কমিটির চেয়ারম্যান, বিজেপি সাংসদ গাভিট বলেন, গত ছ’বছরে শিশুকন্যাদের বাঁচাতে হবে, তাঁদেরও পড়াশোনা শেখাতে হবে, এই সচেতনতা তৈরি হয়েছে। এত দিনে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। তবে এখন মেয়েদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যে বেশি নজর দেওয়া দরকার। রাজ্যগুলির জন্য যে পরিমাণ অর্থ মঞ্জুর হয়েছে, তার মাত্র চার ভাগের এক ভাগ খরচ হয়েছে। সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, পশ্চিমবঙ্গের ‘কন্যাশ্রী’-র মতো অনেক রাজ্যেই ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ ধাঁচের প্রকল্প থাকায় তারা কেন্দ্রীয় প্রকল্পে উৎসাহ দেখাচ্ছে না।