দিল্লির হোটেলে ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার ঘিরে রহস্য। প্রতীকী ছবি।
দিল্লির হোটেলে ব্যবসায়ীর রহস্যমৃত্যুতে শুক্রবার এক মহিলাকে গ্রেফতার করা হল। ব্যবসায়ীর সঙ্গে হোটেলে ঢুকেছিলেন ওই মহিলা। অভিযোগ, ব্যবসায়ীকে মাদক খাইয়ে বেহুঁশ করে টাকা, গয়না লুট করেন তিনি। হোটেলের যে ঘর থেকে ওই ব্যবসায়ীর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাতে ওই ব্যবসায়ী সম্পর্কে মহিলা লিখেছেন, ‘‘আপনি বড় ভাল মানুষ।’’ শুধু তা-ই নয়, ব্যবসায়ীকে বেহুঁশ করে তাঁর টাকা-গয়না লুটের জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন ওই মহিলা। লিখেছেন, ‘‘বাধ্য হয়েই আমি এই কাজ করেছি।’’
গত ৩১ মার্চ উত্তর পূর্ব দিল্লির সফদরজং এলাকায় একটি হোটেলের ঘর থেকে ৫৪ বছর বয়সি দীপক শেট্টির দেহ উদ্ধার করা হয়। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে ওই ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার যে মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁর নাম ঊষা ওরফে অঞ্জলি ওরফে নিক্কি।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত ৩০ মার্চ রাত সাড়ে ৮টায় ঊষাকে সঙ্গে নিয়ে হোটেলে ঢুকেছিলেন ওই ব্যবসায়ী। তার পরই ব্যবসায়ীর জলে কিছু মিশিয়ে দেন ওই মহিলা। এর পর ব্যবসায়ী যাতে ঢালাও মদ্যপান করেন, তার ব্যবস্থা করেন। কিছু ক্ষণের মধ্যেই বেহুঁশ হয়ে যান ব্যবসায়ী। এর পর তাঁর টাকা, গয়না লুট করে রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ চম্পট দেন ঊষা। অচৈতন্য অবস্থাতেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ব্যবসায়ীর।
তদন্তে নেমে পুলিশ আরও জানতে পেরেছে যে, ব্যবসায়ীর সামগ্রী লুটের ঘটনার মূলচক্রী মধুমিতা নামে এক মহিলা। গত বছর হরিয়ানার জেলে ঊষার সঙ্গে মধুমিতার আলাপ হয়েছিল। অতীতে হরিয়ানায় হোটেলে এক ব্যবসায়ীকে যৌনতার জালে জড়িয়ে তাঁর কাছ থেকে সামগ্রী লুটের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল মধুমিতাকে। ভয় দেখানো এবং তোলাবাজির একটি অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল ঊষাকে। এই অভিযোগে দু’জনে হরিয়ানার জেলে বন্দি ছিলেন। পরে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তাঁরা একসঙ্গে থাকতেন।
দিল্লির ব্যবসায়ী দীপককে চিনতেন মধুমিতা। সেই সূত্রেই দীপকের সামগ্রী লুটের ছক কষেছিলেন তিনি। গত ৩০ মার্চ কনট প্লেস মেট্রো স্টেশন এলাকায় ২ মহিলার সঙ্গে দেখা করেছিলেন দীপক। এর পরই ঊষাকে সঙ্গে নিয়ে হোটেলে গিয়েছিলেন তিনি। হোটেলের বাইরে গাড়িতে বসেছিলেন মধুমিতা। দীপকের সামগ্রী লুটের পর মধুমিতার সঙ্গে ওই গাড়িতে করে চম্পট দিয়েছিলেন ঊষা।
ঊষার কাছ থেকে ব্যবসায়ীর সোনার আংটি, মোবাইল ফোন, নীল রঙের ব্যাগ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে ঊষার ভুয়ো আধার কার্ড, মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মধুমিতাকে গ্রেফতার করা যায়নি।