(বাঁ দিকে) শিশুর সুটকেসবন্দি দেহ উদ্ধার। খুনের অভিযোগে গ্রেফতার মা (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
স্বামী, সংসার ছেড়ে অনেক দিন ধরে প্রেমিকের সঙ্গে ঘর বাঁধতে চাইছিলেন তরুণী। বাদ সাধছিল তিন বছরের ছোট কন্যা। তাকে প্রথমে নিজের সঙ্গে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তরুণী। কিন্তু প্রেমিক রাজি হননি। জানান, কন্যাকে নিয়ে আসা চলবে না। অগত্যা সন্তানের হাত থেকে ‘নিস্তার’ পাওয়ার জন্য পথ খুঁজতে থাকেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ‘ক্রাইম পেট্রল’ দেখে নিজের পথ থেকে মেয়েকে সরানোর ছক কষেন তরুণী। সেই মতো কাজও করেন। পুলিশকে জেরায় এমনটাই জানিয়েছেন ধৃত। অভিযোগ, গলা কেটে শিশুকে খুন করেছেন তরুণী। তার পর দেহ সুটকেসে ভরে মুজফ্ফরপুরে একটি ঝোপে তা ছুড়ে ফেলে দেন।
শনিবার বিহারের মজফ্ফরপুরের মিনাপুর থেকে উদ্ধার হয় সুটকেসবন্দি শিশুর দেহ। স্থানীয়েরা সেই দেহ দেখে খবর দেন পুলিশকে। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। গঠন করা হয় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। শিশুটির বাড়িতে পৌঁছন তদন্তকারীরা। সঙ্গে ছিল ফরেন্সিক দল। বাড়ির মেঝে, ছাদ, ওয়াশ বেসিনে রক্তের দাগ দেখতে পান ফরেন্সিক তদন্তকারীরা। যদিও সেখানে ছিলেন না শিশুটির মা কাজল। এর পর তাঁর ফোনে আড়ি পাতে পুলিশ। জানতে পারে ঘটনার দিন স্বামীকে ফোন করেছিলেন তিনি। জানিয়েছিলেন, এক আত্মীয়ার বাড়িতে যাচ্ছেন।
স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন মনোজ। তার ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের করে পুলিশ। এর পর কাজলের ফোনের টাওয়ারের অবস্থান খতিয়ে দেখে খোঁজ শুরু করে পুলিশ। প্রেমিকের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। মুজফ্ফরপুর পুলিশের প্রধান অবধেশ দীক্ষিত জানিয়েছেন, জেরায় খুনের কথা স্বীকার করেছেন কাজল। তিনি জানিয়েছেন, গত দু’বছর ধরে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল তাঁর। দীক্ষিত বলেন, ‘‘মেয়ে সঙ্গে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু প্রেমিক বাধা দেন। তখন কী করবেন বুঝে উঠতে পারেননি তিনি। শেষে গলা কেটে কন্যাকে খুন করে তার দেহ সুটকেসে ভরে ফেলে দেন। তার পর বাড়ির পাশেই ফেলে দেন সুটকেস।’’ দীক্ষিত আরও জানিয়েছেন, নিয়মিত ‘ক্রাইম পেট্রল’ দেখতেন। তা দেখেই ছক কষেছিলেন। তবে এই ঘটনায় প্রেমিকের কোনও ভূমিকা নেই বলেই মনে করছে পুলিশ। তাই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি বলে জানিয়েছেন দীক্ষিত।