মেদিনীপুর স্টেশন থেকে আটক করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি শঙ্কর গুছাইতকে। মঙ্গলবার সকালে। — নিজস্ব চিত্র।
আটক করা হয়েছিল সোমবারই। মঙ্গলবার গ্রেফতারও করা হল নবান্ন অভিযানে ‘বডি পড়বে’ বলা তিন বিজেপি নেতাকে। মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযান নিয়ে তৃণমূলের প্রকাশ করা দু’টি ‘গোপন ভিডিয়ো’ (যার সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি)-র সূত্র ধরে পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থেকে বাবলু গঙ্গোপাধ্যায়, সৌমেন চট্টোপাধ্যায় এবং বিপ্লব মালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি আটক করা হয়েছে বিজেপির পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা সহ-সভাপতি শঙ্কর গুছাইতকে। পুলিশ সূত্রে খবর, নবান্ন অভিযানে যাওয়ার জন্য মেদিনীপুর স্টেশনের দূরপাল্লার ট্রেন ধরার জন্য দাঁড়িয়েছিলেন শঙ্কর। সেখান থেকেই তাঁকে আটক করা হয়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপির আরও সমর্থক।
অন্য দিকে, গ্রেফতার হওয়া তিন বিজেপি নেতাকে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল প্রকাশিত নবান্ন অভিযান সংক্রান্ত কয়েকটি ভিডিয়োয় (আনন্দবাজার অনলাইন সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি)। ওই ভিডিয়োয় তাঁদের প্রত্যেককেই নবান্ন অভিযানে অশান্তির ইঙ্গিত দিতে শোনা যায়। ‘বডি পড়বে’, ‘রাবার বুলেট’ চলবে জাতীয় মন্তব্যও করতে শোনা যায় তাঁদের। ওই তিন বিজেপি নেতার মধ্যে বাবলু ঘাটাল মহকুমার অন্তর্গত খড়ার পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের একমাত্র বিজেপি কাউন্সিলর। বিপ্লব চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের বিজেপির মণ্ডল সভাপতি এবং সৌমেন বিজেপি নেতা বলে জানিয়েছিল পুলিশ। তিন জনকেই সোমবার আটক করে জেরা করা হয়। পরে গ্রেফতার করা হয় তাঁদের। মঙ্গলবার তাঁদের ঘাটাল মহকুমা আদালতেও তোলা হবে।
তৃণমূল প্রথম থেকেই ছাত্র সমাজের ডাকা নবান্ন অভিযানে বিজেপির ‘মদত’ রয়েছে বলে অভিযোগ করে এসেছে। পরে সোমবার তৃণমূল প্রকাশিত গোপন ভিডিয়োয় (ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন) তিন বিজেপি নেতাকে আন্দোলন নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা যায়। পরে সন্ধ্যায় একটি সাংবাদিক বৈঠকে নিজেদের আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত বলে মন্তব্যও করেন ছাত্র সমাজের এক প্রতিনিধি। মঙ্গলবার সকালে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিজেপি জেলা সহ-সভাপতি শঙ্করকেও বিজেপি সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে হাওড়ার দিকে আসার ট্রেন ধরতে দেখা যায়। যেখান থেকে তাঁকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। শঙ্করকে আটক করা নিয়ে সরব হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, ‘‘শঙ্করকে কলকাতা হাই কোর্ট রক্ষাকবচ দিলেও তাঁকে আটক করা হয়েছে। মানুষ সব দেখছে। আমরা মামলা করব।’’
তিন বিজেপি নেতাকে আটক প্রসঙ্গে সোমবার ঘাটালের বিজেপি বিধায়ক শীতল কপাট বলেছিলেন, ‘‘তৃণমূল এবং পুলিশ এক হয়ে বিজেপিকে বদনাম করার চেষ্টা করছে। আরজি কর নিয়ে পুলিশ কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা সকলেই দেখেছেন। আর এখন বিজেপির দু’জনকে আটক করা হল ঘাটালে।’’ যদিও পুলিশ সুপার ধৃতিমান সরকার বলেন, ‘‘ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘাটাল থানার পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে।’’ পুলিশ তাঁদের হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানাবে বলে জানানো হয়েছে।