— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
পুলিশ সেজে ভার্চুয়াল মাধ্যমে জেরা। তার পর ভার্চুয়াল মাধ্যমেই গ্রেফতার করে রাখা হল এক মহিলাকে। আর এ ভাবেই তাঁর থেকে ১১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ। ওই মহিলা নয়ডার বাসিন্দা। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
নয়ডার সাইবার অপরাধ থানা জানিয়েছে, গত কয়েক দিন ‘ডিজিটাল গ্রেফতার প্রতারণা’ শুরু হয়েছে। নয়ডায় এই প্রথম। অভিযু্ক্তেরা আইপিএস অফিসার সেজে ৫০ বছরের এক মহিলাকে প্রতারণা করেছেন। তাঁকে বুঝিয়েছেন, মহিলার ব্যক্তিগত আইডি ব্যবহার করে বেআইনি কাজ হয়েছে। তার পরই তাঁর থেকে টাকা হাতানো হয়েছে। এর আগে হরিয়ানার ফরিদাবাদে একই ভাবে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে।
পুলিশের কাছে অভিযোগ করে মহিলা জানিয়েছেন, গত ১৩ নভেম্বর আইভিআর (ইন্টার্যাকটিভ ভয়েস রেসপন্স) কল এসেছিল। তাতে জানানো হয়েছিল, মহিলার আধার আইডি ব্যবহার করে মুম্বইয়ে একটি মোবাইল সিম কেনা হয়েছে। সেই সিম কার্ড ব্যবহার করে মহিলাদের হেনস্থা করা হয়েছে। প্রতারণা করা হয়েছে। মহিলা জানিয়েছেন, এর পর তাঁর ফোন ট্রান্সফার করা হয় এক ব্যক্তিকে। সেই ব্যক্তি নিজেকে মুম্বইয়ের পুলিশ অফিসার হিসাবে পরিচয় দেন। মহিলার কথায়, ‘‘ওই অফিসার জানান, আমার নামে এফআইআর হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। স্কাইপে এই সংক্রান্ত কিছু নথিও পাঠান তিনি।’’
মহিলা জানান, ওই ব্যক্তি অফিসার সেজে তাঁকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে জেরা করেন। এর পর জানান, তিনি নিরপরাধ। তবে তাঁকে আরও জেরা করবেন সিবিআইয়ের মুম্বই শাখার এক অফিসার। দ্বিতীয় ‘অফিসার’ মহিলাকে জানান, তদন্তে নেমে পুলিশ ২৪৬টি ডেবিট কার্ড পেয়েছে। তার মধ্যে একটি মহিলার আধার কার্ড ব্যবহার করে নেওয়া হয়েছে। ওই অ্যাকাউন্ট থেকে ২০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন ‘ভুয়ো’ অফিসার। এর পর মহিলার সব অ্যাকাউন্টের টাকা একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করতে বলেন ওই ব্যক্তি। মহিলাকে বার বার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, তিনি যেন এই বিষয়টি কাউকে না জানান। এতে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। আর মহিলাকে অ্যাকাউন্টে যথেষ্ট ব্যালেন্স রাখতেও বলেন। এর পরেই তার অ্যাকাউন্ট থেকে লোপাট করা হয় টাকা। মহিলার অভিযোগ, স্কাইপের মাধ্যমে তাঁর সইয়েরও ছবি তুলেছেন অভিযুক্তেরা। তাঁকে প্রায় সারা দিন ধরে ভার্চুয়াল মাধ্যমেই ‘গ্রেফতার’ করে রেখেছেন।
নয়ডা পুলিশের সাইবার অপরাধ দমন শাখার আধিকারিক রিতা যাদব জানিয়েছেন, এই নিয়ে তদন্ত চলছে। পাশাপাশি তিনি সাধারণ মানুষকে সতর্কও করেছেন। জানিয়েছেন, পুলিশ কখনও কাউকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে জেরা করে না। কেউ গ্রেফতারির হুমকি দিলে সমস্ত রকম তথ্য খতিয়ে দেখা উচিত।