দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের কামরা। —ফাইল চিত্র।
ওড়িশার বালেশ্বরে রেল দুর্ঘটনার পর স্বজন হারানোর যন্ত্রণার নানা ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। এখনও অনেক দেহই চিহ্নিত করা হয়নি। আপনজনের খোঁজে দিশেহারা অনেকে। এমন আবহে এক অসাধু কারবারের খবর প্রকাশ্যে এল। মৃতদের পরিবার এবং আহতদের জন্য আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে সরকার। মোটা অঙ্কের সেই আর্থিক সাহায্য হাতানোর ছক কষতে গিয়ে ধরা পড়লেন এক মহিলা।
দুর্ঘটনায় মৃত এক ব্যক্তির স্ত্রী বলে নিজেকে দাবি করে আর্থিক সাহায্য নিতে গিয়েছিলেন ওই মহিলা। তার পরেই রেল পুলিশের হাতে পর্দাফাঁস হল। ওড়িশা টিভি সূত্রে এই খবর জানা গিয়েছে।
জিআরপি (গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ)-তে আর্থিক সাহায্য সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন ওই মহিলা। রেল পুলিশের দাবি, ওই মহিলা কাঁদতে কাঁদতে জানান যে, দুর্ঘটনায় তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। একটি দেহ তাঁর স্বামীর বলে চিহ্নিতও করেন। মহিলা সত্যি কথা বলছেন কি না, তা এই পরিস্থিতিতে যাচাই করেনি পুলিশ। মহিলা কাঁদছিলেন, তাই তাঁকে বেশি প্রশ্নও করেননি রেল পুলিশের কর্মীরা। আর্থিক সাহায্য প্রদানের জন্য সইসাবুদের পর মহিলা এবং তাঁর স্বামীর আধার কার্ড চাওয়া হয়। তখনই সত্যটি প্রকাশ্যে আসে।
আধার কার্ড দেখাতে পারেননি ওই মহিলা। এর পরেই সন্দেহ হয় পুলিশের। যোগাযোগ করা হয় স্থানীয় থানায়। সেই সময়ই জিআরপি থেকে চম্পট দেন ওই মহিলা। পরে তাঁকে পাকড়াও করা হয়েছে কি না, তা এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জানা যায়নি।
গত ২ জুন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে বালেশ্বরের বাহানগা বাজার স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত হয় চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস। বেলাইন হয় বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসও। দুর্ঘটনায় ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও ওড়িশা সরকার জানিয়েছে মৃতের সংখ্যা ২৭৫। দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিজনকে ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য প্রদানের কথা ঘোষণা করেছে রেল। গুরুতর আহতদের ২ লক্ষ টাকা এবং সামান্য আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছে ওড়িশা সরকারও। মৃতদের নিকট আত্মীয়কে ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য এবং গুরুতর আহতদের ১ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কথা জানিয়েছে নবীন পট্টনায়েকের সরকার।