উত্তরপ্রদেশে আত্মঘাতী ব্যাঙ্ককর্মী শিবানী ত্যাগী। ছবি: সংগৃহীত।
সহকর্মীদের ‘খুনসুটি’তে অতিষ্ঠ হয়ে আত্মঘাতী হলেন তরুণী। উত্তরপ্রদেশের একটি ব্যাঙ্কে কাজ করতেন তিনি। শুক্রবার বাড়ি থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সঙ্গে একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তরুণীর নাম শিবানী ত্যাগী (২৭)। উত্তরপ্রদেশের একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে ‘রিলেশনশিপ ম্যানেজার’ হিসাবে কাজ করতেন তিনি। গাজ়িয়াবাদে নিজের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন। পরিবারের অভিযোগ, অফিসে তাঁর সঙ্গে অস্বাভাবিক আচরণ করতেন সহকর্মীরা। তাঁকে নিয়ে মজা করা হত। তাঁর চেহারা থেকে শুরু করে কথা বলার ধরন, সব কিছুই ঠাট্টার শিকার হয়েছিল। গত ছ’মাস ধরে ব্যাঙ্কের ওই শাখায় এই ঘটনা ঘটে চলেছে বলে অভিযোগ। মজার ছলে এই ‘অত্যাচার’ সইতে না পেরেই তরুণী আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ। মানসিক চাপ সহ্য করতে পারেননি তিনি।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত্যুর আগে যে চিঠি লিখে গিয়েছেন তরুণী, সেখানে তাঁর পাঁচ জন সহকর্মীর নাম রয়েছে। তাঁরা ওই ব্যাঙ্কেই কর্মরত। তাঁদের ফাঁসি চেয়েছেন তরুণী। জানিয়েছেন, গত ছ’মাস ধরে অফিসে সকলে মিলে তাঁকে হেনস্থা করেছেন। তাঁর উপর মানসিক অত্যাচার করেছেন। তাঁকে নিজে বার বার মজা করেছেন। প্রকাশ্যে তাঁকে অপমান করা হয়েছে বহু বার।
তরুণীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ জানতে পেরেছে, প্রথম দিকে এই মানসিক অত্যাচারের কথা তিনি বাড়িতে কাউকে জানাননি। কিন্তু ক্রমে তা অসহনীয় হয়ে উঠেছিল। বাধ্য হয়ে বাড়িতেও বিষয়টি জানান তিনি। দাবি, তরুণী একাধিক বার চাকরি ছাড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু কোনও না কোনও কারণ দেখিয়ে তাঁর ইস্তফার চিঠি নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।
তরুণীর ভাই সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘‘অফিসে সকলে আমার দিদির সঙ্গে সকলে মজা করত। মজার ছলে হেনস্থা, অপমান করা হত ওকে। বিভিন্ন অপমানজনক নাম ওকে দেওয়া হয়েছিল। ওর খাওয়ার ধরন, জামাকাপড়, কথা বলা— সব কিছু নিয়েই মজা করা হত।’’ কিছু দিন আগে এক সহকর্মীকে চড় মেরে বসেছিলেন তরুণী, জানান তাঁর ভাই। এর পর সংস্থার তরফে তাঁকে বরখাস্তের নোটিস ধরানো হয়। তাতেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে মৃতের পরিবারও।