— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
শরীর তল্লাশির নামে অসমের একটি পরীক্ষাকেন্দ্রে ছাত্রীদের হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পরেই সমালোচনা শুরু হয়েছে নানা মহলে। সরব হয়েছেন বিরোধীরাও। নড়েচড়ে বসেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাও। ঘটনায় দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
রাজ্য স্তরের নিয়োগ কমিশনের (এসএলআরসি) গ্রেড-৩ পদে নিয়োগের জন্য অসমের বিভিন্ন পরীক্ষাকেন্দ্রে রবিবার নিয়োগের পরীক্ষা ছিল। নলবাড়ি জেলার এমনই এক পরীক্ষাকেন্দ্রে ঘটনাটি ঘটে। বাড়ি ফিরে সমাজমাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন ওই ছাত্রী। তিনি লিখেছেন, ‘‘রবিবার সকালে নলবাড়ির বেলসোরে আমার পরীক্ষাকেন্দ্র শহিদ স্মৃতি সিনিয়র সেকেন্ডারি স্কুলে যাই। প্রবেশের সময় কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল। মহিলা পরীক্ষার্থীদের চেকিংয়ের জন্য ছিলেন দু’জন মহিলাও। তাঁরা সব মহিলার অন্তর্বাসের ভিতর হাত ঢুকিয়ে তল্লাশি করছিলেন। আমার পরনে ছিল কুর্তি। যে পরীক্ষার্থীরা মেখলা সদর পরেছিলেন, তাঁদেরও বাদ দেওয়া হয়নি। আর এই গোটা বিষয়টিই ঘটছিল সর্বসমক্ষে। কারণ, মহিলা পরীক্ষার্থীদের তল্লাশি করার জন্য কোনও কাপড়ের আড়াল পর্যন্ত ছিল না।’’
ওই ছাত্রী আরও জানিয়েছেন, তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন অন্য কোনও পরীক্ষাকেন্দ্রেই এমন ভাবে তল্লাশি করা হয়নি। তিনি বলেছেন, ‘‘যা যা করা হয়েছে, তা যৌন হেনস্থার শামিল। রবিবারের পরিস্থিতি ছিল অত্যন্ত অস্বস্তিকর। ওই ভাবে তল্লাশির পর আমরা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি।’’
ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত। তিনি জানিয়েছেন, এ বিষয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি জিপি সিংহের সঙ্গে কথা হয়েছে তাঁর। পুলিশকে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। হিমন্ত আরও বলেছেন, ‘‘তবে একই দিনে উত্তর লখিমপুরে এক ছাত্রীর অন্তর্বাসের মধ্যে নকল করার উপকরণ মিলেছে। ফলে আগামী দিনে পরীক্ষায় স্বচ্ছতার কথা মাথায় রেখেই মহিলা পরীক্ষার্থীদের তল্লাশির নিয়মনীতিগুলি পর্যালোচনা করতে হবে।’’
প্রসঙ্গত, রবিবার অসম জুড়ে মোট ১১ লক্ষ ২৩ হাজার পরীক্ষার্থী রাজ্য স্তরের এই নিয়োগ পরীক্ষায় বসেছেন। রাজ্যব্যাপী ২৩০৫টি পরীক্ষাকেন্দ্রে লিখিত পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। তল্লাশির পর সকাল সাড়ে ১০টায় পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা পরিচালনার জন্য অসম জুড়ে ৭০ হাজারেরও বেশি পরিদর্শককে মোতায়েন করা হয়েছিল।