এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
মণিপুরে আবার অশান্তি। স্বামীর সামনেই মহিলাকে ধর্ষণ করে জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ। সেই সঙ্গে গ্রাম জুড়ে চলল লুটপাট, অত্যাচার এবং দুষ্কৃতীদের তাণ্ডব। বৃহস্পতিবার রাতের সেই ঘটনার পর থেকে মণিপুরের জিরিবাম জেলার জ়াইরন গ্রাম উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। শনিবারও দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে এলাকায়। দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছেন গ্রামবাসীরা। মহিলার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য শিলচরে পাঠানো হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, নিহত মহিলার বয়স ৩১। তিনি তিন সন্তানের জননী। স্বামীর সামনেই তাঁকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। মহিলার স্বামী থানায় সেই মর্মে অভিযোগও দায়ের করেছেন। জাতপাত এবং ধর্মীয় হিংসার জেরে এই ধর্ষণ এবং খুন, অভিযোগে দাবি করেছেন মহিলার স্বামী। তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শুক্রবার রাত পর্যন্ত কোনও হদিস পায়নি পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে দাবি, বৃহস্পতিবার রাতে আচমকা এক দল দুষ্কৃতী গ্রামে ঢুকে পড়ে। একাধিক বাড়িতে ঢুকে লুটপাট চালায় তারা। গ্রামের অন্তত ১৭টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। দোষীদের শাস্তির দাবিতে শুক্রবার দিনভর বিক্ষোভ দেখিয়েছেন গ্রামবাসীরা। শনিবার সকাল থেকেও বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে দফায় দফায় গ্রাম উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। জিরিবামের এসপি জানিয়েছেন, মণিপুরে ময়নাতদন্তের সুযোগ থাকলেও মহিলাদের দেহ জিরিবাম থেকে অসমের শিলচরে পাঠানোই বেশি সুবিধাজনক হবে। জেলা প্রশাসনকে সে বিষয়ে অবগত করা হয়েছে।
জিরিবামের জ়াইরন গ্রামে মূলত আদিবাসীদের বাস। কুকি, জ়োমি, মার গোষ্ঠীর নেতারা এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। তাঁরা কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। চুরাচাঁদপুরের আদিবাসী সম্প্রদায়ের তরফেও বিবৃতি দিয়ে অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতারির দাবি জানানো হয়েছে।
গত বছর মাসের পর মাস উত্তপ্ত থেকেছে মণিপুরের বিস্তীর্ণ অংশ। চুরাচাঁদপুরে হিংসার জেরে ২০০-র বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। বহু ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। অনেকে ঘরছাড়া হতে বাধ্য হয়েছেন। বৃহস্পতিবার জিরিবামের ঘটনা সেই হিংসার স্মৃতি আবার ফিরিয়ে দিয়েছে।