Hijab Row

হিজাব পরে কর্নাটকে আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মুসলিম ছাত্রীরা? বিবেচনার বার্তা কংগ্রেস সরকারের

গত বছর কর্নাটকের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কয়েক জন হিজাব পরিহিত ছাত্রীকে ক্লাসে বসতে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এর জারি হয় ‘হিজাব নিষিদ্ধ’ আইন। সেই বিতর্ক এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২৩ ২০:৩৯
Share:

কর্নাটকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিজেপি জমানার হিজাব নিষিদ্ধের নির্দেশিকা প্রত্য়াহার করতে পারে কংগ্রেস সরকার। ফাইল চিত্র।

সরকার বদলের পরেও কি সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে হিজাব নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে? গত ১৩ মে বিধানসভা ভোটে বিজেপির বিপর্যয়ের পরেই প্রশ্ন উঠেছিল কর্নাটকে। বুধবার সে রাজ্যের নতুন কংগ্রেস সরকার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিত দিয়েছে।

Advertisement

কর্নাটকের মন্ত্রী তথা প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জি পরমেশ্বর বুধবার বলেন, ‘‘বিজেপি সরকারের আমলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ করার যে নির্দেশিকা জারি হয়েছিল তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বিষয়টি এখন বিচারাধীন। আমরা এ সংক্রান্ত সমস্ত দিক খতিয়ে দেখব।’’

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি কর্নাটকের উদুপিতে একটি প্রি-ইউনিভার্সিটিতে কয়েক জন হিজাব পরিহিত পড়ুয়াকে ক্লাসে বসতে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। কলেজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি তথা স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক রঘুপতি ভট্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হিজাব পরিহিতরা ক্লাসে ঢুকতে পারবেন না। সেই বিতর্ক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে রাজ্য জুড়ে। হিজাবের পাল্টা হিসেবে গেরুয়া উত্তরীয় পরে আন্দোলন শুরু করে একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন।

Advertisement

কয়েকটি জায়গায় হিজাবের পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলনকারীরা মুখোমুখি হয়ে পড়েন। পুলিশের সঙ্গেও একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কয়েকটি জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সমস্ত স্কুল-কলেজ অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর পর ২০২২ সালের ২৬ জানুয়ারি কর্নাটক সরকারের শিক্ষা দফতর এ বিষয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে। ঘোষণা করা হয়, কমিটি নির্দিষ্ট সুপারিশ করার আগে পর্যন্ত ছাত্রীরা কেবলমাত্র ইউনিফর্ম পরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে পারবেন। হিজাব বা গেরুয়া উত্তরীয়— কিছুই পরার অনুমতি নেই।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উদুপির কয়েক জন ছাত্রী কর্নাটক হাই কোর্টে রিট মামলা দায়ের করেন। তাঁরা আদালতকে জানান, হিজাব পরা তাঁদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। কোনও ভাবেই তা বাতিল করা যায় না। ১০ ফেব্রুয়ারি কর্নাটক হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ঋতুরাজ অবস্তির নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ অন্তর্বর্তী রায়ে বলে, ‘‘যত দিন না রায় ঘোষণা হচ্ছে, কর্নাটকে স্কুল-কলেজ খুলতে পারে কিন্তু কোনও পড়ুয়া ধর্মীয় প্রতীকমূলক কোনও পরিধান পরে সরকারি স্কুল-কলেজে আসতে পারবেন না।’’

এর পর সে বছরের মার্চ মাসে কর্নাটক হাই কোর্ট মুসলিম ছাত্রীদের আবেদন খারিজ করে জানায়, হিজাব পরা ইসলামে ‘বাধ্যতামূলক ধর্মীয় অনুশীলন’-এর মধ্যে পড়ে না। এর পর আবেদনকারীরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। কিন্তু গত অক্টোবরে বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ ‘খণ্ডিত রায়’ দেওয়ায় মামলাটি এখন শীর্ষ আদালতেরই উচ্চতর বেঞ্চে গিয়েছে। দুই বিচারপতির বেঞ্চ স্থগিতাদেশ না দেওয়ায় কর্নাটক সরকারের ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধের নির্দেশ’ এখনও বহাল রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হিজাবের মতো ‘বিচারাধীন বিষয়’ নিয়ে কর্নাটকের কংগ্রেস সরকার বিভিন্ন আইনি দিক খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করবে বলে রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement