Deepfakes Controversy

শরীর-মুখ বদলে দেওয়া ডিপফেক নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র, ১০ দিনের মধ্যেই তৈরি হবে খসড়া আইন

ডিপফেককে ‘গণতন্ত্রের নয়া বিপদ’ বলে উল্লেখ করে কেন্দ্রীয় তথ্য এবং প্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, এই প্রযুক্তির ব্যবহার রুখতে মূলত চারটি বিষয়ের উপর জোর দিতে চাইছে সরকার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:৪১
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ডিপফেক প্রযুক্তি নিয়ে এ বার কড়া অবস্থান নিতে চলেছে কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার গুগল, ফেসবুকের পরিচালক সংস্থা মেটা-সহ অন্যান্য তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় তথ্য এবং প্রযুক্তি মন্ত্রকের কর্তারা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবও। সেই বৈঠকের শেষেই মন্ত্রী জানান, ডিপফেক প্রযুক্তির মোকাবিলায় উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দশ দিন সময় নিচ্ছে কেন্দ্র। তত দিনে ডিপফেক প্রযুক্তি নিয়ে খসড়া আইন তৈরি করা হবে বলেও জানান মন্ত্রী। প্রস্তাবিত আইনে কড়া শাস্তির বিধান রাখা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

ডিপফেক সংক্রান্ত পরবর্তী বৈঠক ১ ডিসেম্বর। ওই দিন এই খসড়া আইন নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে জানান মন্ত্রী। ডিপফেককে ‘গণতন্ত্রের নয়া বিপদ’ বলে উল্লেখ করে মন্ত্রী জানান, এই প্রযুক্তির ব্যবহার রুখতে মূলত চারটি বিষয়ের উপর জোর দিতে চাইছে সরকার। সেগুলি হল চিহ্নিতকরণ, কী ভাবে সেটি ছড়িয়ে পড়া থেকে আটকানো যায়, কী ভাবে বিষয়টিকে নথিবদ্ধ করা যায় এবং সচেতনতা। বৈঠকের শেষে বৈষ্ণব বলেন, “ডিপফেক প্রযুক্তিকে কী ভাবে রোখা যায়, তার পথ সন্ধান করতে আমরা আজ থেকেই খসড়া বিধি তৈরি শুরু করছি। ১ ডিসেম্বর পরবর্তী বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।” সরকারের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, দেশে তথ্য এবং প্রযুক্তি সংক্রান্ত যে আইন বর্তমানে চালু রয়েছে, তারই পরিবর্ধিত অংশ হিসাবে নতুন আইনটিকে রাখা হবে।

প্রসঙ্গত, ডিপফেক প্রযুক্তি নিয়ে উদ্বেগ ছড়াচ্ছে সমাজের সর্ব স্তরেই। এই প্রযুক্তিতে কৃত্রিম মেধার সাহায্যে বদলে দেওয়া হচ্ছে কারও শরীর, তো কারও মুখ। এক জনের শরীরে অন্যের মুখ বসিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ভুয়ো ভিডিয়ো। যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ছাড়িয়ে যাচ্ছে শালীনতার মাত্রা।

Advertisement

সম্প্রতি বলিউডের তিন অভিনেত্রী এই প্রযুক্তির শিকার হয়েছেন। ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে বলিউড অভিনেত্রী কাজলের একটি ডিপফেক ভিডিয়ো। তাতে কাজলকে দেখা যাচ্ছে, ক্যামেরার সামনে পোশাক পরিবর্তন করতে। ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তা নিয়ে হইচই পড়ে যায়। ভিডিয়োটি ফেক বা জাল ভিডিয়ো বলে দাবি করেন অনেকেই। এর পরই ইন্টারনেটের ফ্যাক্টচেকিং সংস্থাগুলি ওই ভিডিয়ো পরীক্ষা করে জানায়, ভিডিয়োটি আসলে এক জন টিকটক তারকার। টিকটকে তিনি পোশাক পরার ভিডিয়ো পোস্ট করেন প্রায়শই। তেমনই একটি ভিডিয়োয় কাজলের মুখ জুড়ে দেওয়া হয়েছে। কিছু দিন আগে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছিল অভিনেত্রী ক্যাটরিনা কাইফ এবং রশ্মিকা মন্দানার সঙ্গেও। বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ করা উচিত বলে সরব হয়েছিলেন অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন।

সম্প্রতি ডিপফেক নিয়ে উদ্বেগের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের হাতে এখন কৃত্রিম মেধার মতো উন্নত প্রযুক্তি রয়েছে। আমাদের উচিত দায়িত্ববোধের সঙ্গে সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করা। কেউ যেন এই ধরনের প্রযুক্তি অপব্যবহার না করেন, তার জন্য এ ব্যাপারে উপযুক্ত শিক্ষার প্রসার ঘটানো জরুরি।’’ মোদী এ-ও জানান যে, তিনি ইতিমধ্যেই কৃত্রিম মেধা ব্যবহারকারী কম্পিউটার সিস্টেম চ্যাট জিপিটির সঙ্গে কথা বলেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement