Jai Shri Ram

জয় শ্রীরাম বললে কেন খারাপ লাগবে: যোগী

অভিযোগ, শুধু উত্তরপ্রদেশ বা বাংলা নয়। গোটা দেশেই যোগী আদিত্যনাথকে মেরুকরণের মুখ হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি।

Advertisement

প্রেমাংশু চৌধুরী

লখনউ শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:২৮
Share:

‘জয় শ্রীরাম’ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা দিলেন যোগী আদিত্যনাথ। ছবি: পিটিআই।

কলকাতা থেকে লখনউয়ের কালিদাস মার্গের দূরত্ব কতখানি? প্রায় হাজার কিলোমিটার।

Advertisement

এত দূরে বসেও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ‘জয় শ্রীরাম’ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে খোঁচা দিলেন। তাঁর বক্তব্য, যদি কেউ ‘জয় শ্রীরাম’ বলে, তা হলে এতে খারাপ লাগার কিছু নেই। কারণ, এ তো এক প্রকারের অভিবাদন।

গত ২৩ জানুয়ারি ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজি-র ১২৫-তম জন্মবার্ষিকী সূচনার অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তৃতা শুরুর আগেই ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান উঠেছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সামনেই প্রতিবাদ জানান মমতা। প্রতিবাদে বক্তৃতাও দেননি।

Advertisement

আজ লখনউয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে এক আলাপচারিতায় যোগী বলেন, “সাধারণ ভারতীয় জনমানসে রামের নামে এক বিশেষ অনুভূতি হয়। জয় শ্রীরাম কারও কাছে সম্বোধন। যদি কেউ নমস্কার বা জয় শ্রীরাম বলেন, তা হলে সেটা তাঁর শিষ্টাচার। জয় শ্রীরাম স্লোগান তোলা হলে তাতে খারাপ লাগার মতো কিছু নেই। অনাবশ্যক এ নিয়ে জলঘোলা করাটাও ঠিক নয়।”

আগামী বছর উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোট। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর, কোনও অশান্তি ছাড়াই অযোধ্যায় রামমন্দিরের কাজ শুরু করে দেওয়ার ‘সাফল্য’ যোগীর অন্যতম তুরুপের তাস হতে চলেছে। তার আগে বাংলার ভোটেও বিজেপি ‘জয় শ্রীরাম’-কে সুকৌশলে অস্ত্র করে ফেলায় তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, বিজেপি আসলে ভোটের মেরুকরণ করতে চাইছে। যোগীর যুক্তি, “কারও উপরে তো জয় শ্রীরাম জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। এটা কোনও জোরজুলুমের বিষয় নয়।”

উত্তরপ্রদেশের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য্য পশ্চিমবঙ্গ ঘুরে এসেছেন। ফেরার পরে এই ওবিসি নেতার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী যোগীর বাংলার পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যোগীর দাবি, “বিজেপিই বাংলায় সরকার গঠন করবে। জনতা বিজেপিকে সমর্থন করছে। বিজেপির নেতৃত্বের প্রতি বাংলার মানুষের বিশ্বাস তৈরি হয়েছে। সরকার বিজেপিরই হবে।” যোগীর দফতর সূত্রের খবর, বাংলায় ভোটের প্রচারের জন্য যোগী আদিত্যনাথের চাহিদা প্রবল। একাধিক দফায় তাঁকে প্রচারে নামানো হতে পারে। যোগীর জবাব, দলের
কাজের জন্য যে কোনও রাজ্যেই যেতে তিনি তৈরি।

বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, শুধু উত্তরপ্রদেশ বা বাংলা নয়। গোটা দেশেই যোগী আদিত্যনাথকে মেরুকরণের মুখ হিসেবে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি। গত নভেম্বরের শেষে উত্তরপ্রদেশে বিয়ের জন্য ধর্মান্তর রোখায় অধ্যাদেশ জারিকে তারই নমুনা হিসেবে তুলে ধরছেন বিজেপি বিরোধীরা। কিন্তু বিজেপি নেতাদের দাবি, হিন্দু মেয়েদের প্রেমের ছলে ভুলিয়ে ধর্মান্তর করে বিয়ে করা আসলে লাভ জেহাদ। যোগী রাজ্যের অধ্যাদেশের পক্ষে সওয়াল করে বলেন, “শুধু এ দেশে নয়।
গোটা দুনিয়াতেই এই সমস্যা তৈরি হতে চলেছে।”

নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে এখনও পর্যন্ত জোর করে ধর্মান্তর ও বিয়ের অভিযোগে ১৪টি মামলা দায়ের হয়েছে। অধ্যাদেশে ধর্মান্তর করে বিয়ে বাতিল করে, ১০ বছর পর্যন্ত জেল, ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার ব্যবস্থা রয়েছে। যোগী বলেন, “কেরল, কর্নাটকের হাইকোর্ট ১০ থেকে ১২ বছর আগে এই আইনের প্রয়োজনের পক্ষে কথা বলেছিল। কেরলের সরকার করতে না পারলে আমরা কী করব? আমাদের কোনও আদালতের নির্দেশের দরকার পড়ে না। রাজ্যের স্বার্থে যেটা দরকার, সেটাই করি। আমজনতা বিয়ের জন্য ধর্মান্তর রোখার অধ্যাদেশকে সমর্থন করছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement