‘কিংমেকার’ গোপাল কান্ডাকে নিয়ে আপাতত সারা দেশে তুমুল জল্পনা। ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া
হরিয়ানায় সরকার গড়তে বিজেপিকে সাহায্য করবেন গোপাল কান্ডা। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন পাঁচ জন নির্দল প্রার্থীও। এই নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত স্পষ্ট হতেই শোরগোল শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। গোপালের সমর্থন আদায়ের খবর সামনে আসতেই দ্বিখন্ডিত বিজেপির অন্দরমহলও। প্রশ্ন উঠছে, ক্ষমতাদখল না মহিলাদের পাশে থাকা, বিজেপির অগ্রাধিকার কী? বিরোধীরাও তোপ দেগে বলছেন, ক্ষমতাদখলের লড়াইয়ে ধর্ষণে অভিযুক্ত এক ব্যক্তি কেন ‘কিংমেকার’ হয়ে উঠবেন!
৭৫ পার করার লক্ষ্য নিয়ে এগোলেও এবার হরিয়ানায় মুখরক্ষা করতে পারেনি বিজেপি। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অধরাই থেকে গিয়েছে। ৪০টি আসন হাতে নিয়ে সরকার গড়তে আরও অন্তত ছ’জনের সমর্থন চাই। এই অবস্থায় পরিত্রাতার ভূমিকা নিয়েছেন হরিয়ানা লোকহিত পার্টির নেতা গোপাল কান্ডা। তাঁর দাবি, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বেই হরিয়ানা উন্নয়নের দিশা পাবে। তাই সব নির্দল বিধায়কই নি:শর্তে তাঁর হাত ধরতে চলেছেন।’’গোপালের সমর্থন আদায় নিয়েই যাবতীয় সমস্যা। বিরোধীরা তো নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেনই, দু’ভাগহয়ে গিয়েছে বিজেপির অন্দরমহল। এদিন বিজেপির সহ-সভাপতি উমা ভারতী টুইটারে স্পষ্ট লেথেন, ‘গোপাল কান্ডা দোষী না নির্দোষ তা আদালত ঠিক করবে। কিন্তু ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসা মানেই তাঁর সব দোষ খারিজ হয়ে যায় না।’যে দলের মুখ মোদী, সে দলের কেন গোপাল কান্ডার দরকার হবে সে প্রশ্নও ওঠে বিজেপির তরফে।।
বিজেপিকে একহাত নিয়েছে কংগ্রেসও। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা এদিন লোকহিত দলের প্রধানের নাম না করেই বলেন, যারা নৈতিকতা অনৈতিকতার ধার ধারে না, সরকার গড়তে তাঁদের ওপর ভরসা করতে হচ্ছে বিজেপি-কে। শেষবেলায় গোপালের সমর্থন আদায়ের চেষ্টাকে ভর্ৎসনা করেছেন কংগ্রেস নেতা সুস্মিতা দেবও। তাঁর হাতিয়ার বিজেপির ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ স্লোগান।
আরও পড়ুন: গেরুয়া শিবিরকে ভরসা দিচ্ছেন ‘কিংমেকার’ গোপাল কান্ডা, কটাক্ষ কংগ্রেসের
আরও পড়ুন: সারা দিনই চলবে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি, তবে আলোর উৎসবে বাধা হবে না নিম্নচাপ
গোপাল কান্ডার সঙ্গে বিজেপির এই সমীকরণ নিয়ে জলঘোলা হওয়ার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। একসময়ে মন্ত্রী হিসেবে তাঁর অপসারণের দাবিতে রীতিমতো পথে নেমেছিল বিজেপিই। ২০১২ সালে গোপালের বিমানসংস্থা এমডিএলআরের এক কর্মী আত্মহত্যা করেন। সুইসাইড নোটে তিনি গোপালকেই দায়ী করেন তাঁর মৃত্যুর জন্যে। ছয় মাস পরে আত্মহত্যা করেন মেয়েটির মা-ও। তিনিও গোপালকেই দায়ী করে যান মৃত্যুর জন্যে। ধর্ষণ ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে গোপালকে গ্রেফতারও করা হয়। ২০১৪ সালের মার্চ মাসে তিনি জামিন পান। সে বছর ভোটে দাঁড়ালেও অবশ্য ব্যর্থই হতে হয় গোপালকে।
আপাতত সেই অতীতকে সম্পূ্র্ণ ভুলেই নতুন সম্পর্কে যেতে মরিয়া বিজেপি। কারণ দুষ্যন্ত চৌটালার দল শেষ পর্যন্ত তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেনি। রাজনৈতিক মহলে কানাঘুষো, তারা বিজেপিকে সমর্থন করতে রাজি নয়। চৌটলা এদিন বলেন, ‘কোন দল সরকার গড়বে তা নির্ধারণ করার চাবিটা এখনও জেজেপির কাছেই রয়েছে।’