Anubrata Mondal

উকিলের জন্য কত টাকা খরচ করছেন অনুব্রত? তাঁকে এত অর্থ জোগাচ্ছে কে? প্রশ্ন ইডির

ইডি-র এক তদন্তকারী অফিসার সেহগলকে এজলাসের বাইরে মজা করে জিজ্ঞাসা করছিলেন, ‘এই যে তোমার হয়ে এত বাঘা বাঘা আইনজীবীরা সওয়াল করছেন, এঁদের খরচ কে জোগাচ্ছে?’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৩ ০৫:৪৮
Share:

অনুব্রত মণ্ডল। ফাইল চিত্র।

গত নভেম্বর মাসের কথা। দিল্লিতে নিয়ে আসার পরে অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সেহগল হোসেনকে ইডি-র জেরা শেষ হয়ে গিয়েছে। তাঁকে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে পেশ করা হয়েছে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই আদালত সেহগলকে ইডি-র হেফাজত থেকে নিয়ে দিল্লির তিহাড় জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেবে। তার আগে ইডি-র এক তদন্তকারী অফিসার সেহগলকে এজলাসের বাইরে মজা করে জিজ্ঞাসা করছিলেন, ‘‘এই যে তোমার হয়ে এত বাঘা বাঘা আইনজীবীরা সওয়াল করছেন, এঁদের খরচ কে জোগাচ্ছে?’’

Advertisement

সেহগল হোসেনের ‘বস্’, গরু পাচার মামলায় ধৃত অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্টকে নিয়েও এখন একই প্রশ্ন ইডি-র অন্দরমহলে। তা হল, দিল্লিতে ইডি-র হেফাজতে থেকে জেরা এড়াতে আইনজীবীদের পিছনে কত টাকা খরচ করছেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা? তাঁকে এত অর্থ জোগাচ্ছেই বা কে?

গত নভেম্বর মাসে ইডি আসানসোলের জেলের ভিতরে অনুব্রতকে গ্রেফতার করেছিল। তার পর থেকেই তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে আসার তোড়জোড় চলছে। তা এড়াতে অনুব্রত দিল্লি হাই কোর্টে একাধিক মামলা করছেন। কলকাতা হাই কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়েছেন। সেখানে তাঁর হয়ে মামলা লড়তে নেমেছেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি ও কপিল সিব্বল। দু’জনেই সুপ্রিম কোর্টের প্রথম সারির আইনজীবী। ওকালতির ফি-এর হিসাবেও প্রথম সারিতে। মনু সিঙ্ঘভি, সিব্বল ছাড়াও দিল্লির দুই প্রসিদ্ধ অপরাধ মামলার আইনজীবী এন হরিহরণ এবং রমেশ গুপ্তকে অনুব্রতের হয়ে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে। কলকাতায় আবার অনুব্রতের হয়ে প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত, প্রবীণ আইনজীবী সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায়রা মামলা লড়েছেন। ওয়াকিবহাল মনে করছে, শুধু উকিলদের ফি হিসাবেই কোটি কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছেন অনুব্রত।

Advertisement

বার বার বিভিন্ন আদালতে নানা রকম মামলা করে ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদ ঠেকানোর চেষ্টা করতে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডলকে তার ফলও ভুগতে হয়েছে। প্রথমে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে ইডি ৬০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দায়ের করতে পারেনি বলে অনুব্রত জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন। সেই আর্জি খারিজ করে বিশেষ আদালতের বিচারক রঘুবীর সিংহ বলেছেন, অনুব্রত নিজেই মামলা করে ইডি-র দিল্লিতে জিজ্ঞাসাবাদ পিছিয়ে দেবেন। তার পরে তিনিই ইডি নির্দিষ্ট সময়ে চার্জশিট পেশ করতে পারেনি বলে জামিন চাইবেন! অনুব্রতকে নিজের ‘দুষ্কর্মের সুফল’ তুলতে দেওয়া যায় না। গত শুক্রবারও অনুব্রত কলকাতা ও দিল্লি হাই কোর্টে একই সঙ্গে মামলা করেছেন বলে দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি দীনেশ কুমার শর্মা মামলা শুনতে চাননি। তিনি অনুব্রতের আইনজীবী অঙ্কুর চাওলাকে ভর্ৎসনা করেন। অঙ্কুর বলেন, তিনি জোড় হাত করে দুঃখপ্রকাশ করছেন। কলকাতা হাই কোর্টও অনুব্রতকে একই সঙ্গে একাধিক জায়গায় মামলা করার জন্য ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে।

ইডি-র এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, “গরু পাচার থেকে অনুব্রতের পকেটে কত টাকা ঢুকেছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সেই টাকার সিংহ ভাগটাই অনুব্রত উকিলদের পিছনে খরচ করে ফেললেন কি না, সেটাও বোধ হয় খতিয়ে দেখা দরকার!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement