বাড়তি বৃষ্টি মরুরাজ্যে, বঙ্গে ঘাটতি

মরুরাজ্য রাজস্থান শুখা এলাকা হিসেবেই চিহ্নিত। সেখানে এমন অতিবৃষ্টি কেন? তা হলে কি এটা জলবায়ু বদলের প্রভাব?

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৯ ০১:১৮
Share:

ছবি: রয়টার্স।

প্রকৃতির তুঘলকিপনার দৃষ্টান্ত মিলছে চলতি বর্ষাতেও। মৌসুমি বায়ু এ বার কমজোরি। তাই দেশের বেশির ভাগ কৃষিপ্রধান রাজ্যই বৃষ্টি-ঘাটতিতে ভুগছে। অথচ বাড়তি বৃষ্টি পেয়েছে মরুরাজ্য! দিল্লির মৌসম ভবনের তথ্য বলছে, ১ জুন থেকে ৭ জুলাইয়ের নিরিখে রাজস্থানে ২৭% অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু সজলাশ্যামলা বাংলায় ঘাটতি বর্ষার পরিমাণ ৪৩%! উত্তরপ্রদেশ, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ডেও বর্ষার ঘাটতি রয়েছে।

Advertisement

মরুরাজ্য রাজস্থান শুখা এলাকা হিসেবেই চিহ্নিত। সেখানে এমন অতিবৃষ্টি কেন? তা হলে কি এটা জলবায়ু বদলের প্রভাব? বর্ষার চরিত্র বদল নিয়ে অনেকেই তাঁদের গবেষণায় নানান দাবি করেন। রাজস্থানে এই অতিবৃষ্টি সেই দাবিকেই জোরালো করে বলে মনে করছেন আবহবিজ্ঞানীদের একাংশ।

বর্ষার চরিত্র বদলে গিয়েছে, মৌসম ভবনের বিজ্ঞানীরা এ কথা সরাসরি বলছেন না। কিন্তু কয়েক বছর ধরেই রাজস্থানে স্বাভাবিকের থেকে বেশি বৃষ্টি হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। মধ্যপ্রদেশেও উদ্বৃত্ত বৃষ্টি হয়েছে।

Advertisement

মৌসম ভবনের একটি সূত্র বলছে, এ বছর পূর্ব রাজস্থানে এখনও পর্যন্ত ৬২% বেশি বৃষ্টি হয়েছে। পশ্চিম রাজস্থানে ২৬% বৃষ্টির ঘাটতি থাকলেও মরুশহর জয়সলমের এবং তার লাগোয়া এলাকায় বৃষ্টির পরিমাণ স্বাভাবিক। সাধারণত, দীর্ঘ সময়ের বৃষ্টির পরিমাণ ধরে একটি গড় স্বাভাবিক মাত্রা নির্ধারণ করেন আবহবিদেরা। মরুভূমিতে অবশ্য স্বাভাবিকের থেকে কম বৃষ্টি হওয়াই দস্তুর। বর্ষার চরিত্রে যে বদলের হাওয়া বইছে, তা মেনে নিচ্ছেন মৌসম ভবনের এক কর্তা। তাঁর কথায়, ‘‘স্থানীয় ক্ষেত্রে বর্ষার চরিত্রে একটা বদলের ধারা লক্ষ করা যাচ্ছে। রাজস্থানে সেটা প্রকট। কিন্তু তা স্থায়ী বদল কি না, এত দ্রুত বলা যাবে না।’’

কেন এমন হচ্ছে, তার নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা এখনও বিজ্ঞানীরা দিতে পারেননি। তাঁদের অনেকের মতে, বদলের চরিত্র এত বিচিত্র যে, কোনও নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছনো সম্ভব নয়। আরও কয়েক বছর পর্যবেক্ষণের পরে বোঝা সম্ভব হবে। কেন্দ্রীয় আবহবিজ্ঞান বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, প্রতি বছর বর্ষা সমান হয় না। বর্ষার ক্ষেত্রে একটি ‘ভ্যারিয়েবিলিটি’ বা তারতম্য থাকে। সেই তারতম্য বাড়তে দেখা যাচ্ছে।

এ বছর বেশির ভাগ রাজ্যে বৃষ্টি-ঘাটতির জন্য দুর্বল বর্ষাকেই দায়ী করছেন আবহবিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, বর্ষা একে তো দেরি করে ঢুকেছে। তার উপরে সে-ভাবে শক্তি বাড়েনি তার। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পেরোনোর পরে সে গোটা দেশে ছড়িয়েছে। তবে চলতি সপ্তাহে উত্তর ভারতে বৃষ্টি বাড়তে পারে।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement