Karnataka Assembly Election 2023

বেঙ্গালুরুতে উৎসব সিদ্দা-সমর্থকদের! কিন্তু কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা পিছোল কংগ্রেস

কর্নাটকে বিপুল জয়ের জন্য শিবকুমারের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করলেও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলার কারণে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বাছাই করার ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্ত কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০২৩ ১৫:৪৫
Share:

বেঙ্গালুরুতে সিদ্দারামাইয়ারে সমর্থকেরা ‘উৎসব’ শুরু করলেও মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা পিছিয়ে দিল কংগ্রেস। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই বেঙ্গালুরুতে ‘উৎসব’ শুরু করল সিদ্দারামাইয়া শিবির। তাঁর গোষ্ঠীর নেতাদের দাবি, কর্নাটকের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁকেই বেছে নিয়েছে কংগ্রেস হাইকমান্ড। যদিও কর্নাটকের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার ইঙ্গিত, বুধবার পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা হচ্ছে না। তিনি বলেন, ‘‘আগামী ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আমরা কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচন করব।’’

Advertisement

অর্থাৎ, বৃহস্পতিবার কর্নাটকের নয়া মুখ্যমন্ত্রীর শপথ কার্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। এআইসিসির একটি সূত্র জানাচ্ছে, বুধবার সকালে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের সময় মুখ্যমন্ত্রিত্বের প্রশ্নে ‘অনড়’ মনোভাব দেখিয়েছেন, সিদ্দার ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমার। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিত্বের পাশাপাশি শিবকুমারকে ‘পছন্দের দফতর’-সহ উপমুখ্যমন্ত্রী করার প্রস্তাব দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তাঁর অনুগামীদের জন্য ৬টি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রিপদ বরাদ্দ করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ‘বরফ গলেনি’। যদিও কংগ্রেসের তরফে এমন ‘প্রস্তাবের’ কথা স্বীকার করা হয়নি।

কংগ্রেসের ওই সূত্র জানাচ্ছে, কর্নাটক বিধানসভা ভোটে দলের বিপুল জয়ের জন্য শিবকুমারের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করলেও তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলার কারণে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বাছাই করার ক্ষেত্রে দ্বিধাগ্রস্ত কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের প্রতি দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকলেও শেষ পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির ‘অতিসক্রিয়তা’ শিবকুমারের বিপক্ষে যেতে পারে। আর এখানেই এগিয়ে রয়েছেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী সিদ্দারামাইয়া। তা ছাড়া কর্নাটকের নবনির্বাচিত কংগ্রেস বিধায়কদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশও সিদ্দারামাইয়াকে চাইছেন।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, বুধবারেই শিবকুমারের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তির অভিযোগের তদন্তে নামার জন্য সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন চেয়েছে সিবিআই। গত সেপ্টেম্বরে বেঙ্গালুরুর গ্রামীণ জেলার কনকপুরা, ডোড্ডা আলাহল্লি এবং সন্থে কোডিহল্লিতে কর্নাটক প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি শিবকুমারের মালিকানাধীন বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়েছিল তারা। ডিসেম্বরে সিবিআই হানা দিয়েছিল বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শিবকুমারের একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। এরই মাঝে বেআইনি আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে আর এক কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র জিজ্ঞাসাবাদের মুখেও পড়তে হয়েছিল তাঁকে।

২০১৭ সালের অগস্টে কর্নাটকের তৎকালীন মন্ত্রী শিবকুমারের বিরুদ্ধে ৭০টি জায়গায় অভিযান চালিয়েছিল আয়কর দফতর। এর পর আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগে ২০১৮ সালে মামলা দায়ের করে ইডি। ২০২০ সালের অক্টোবরে দুর্নীতির অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্তে নেমেছিল সিবিআই। কিন্তু কর্নাটক হাই কোর্ট শিবকুমারের আর্জির প্রেক্ষিতে এই তদন্তে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। চলতি বছরের মার্চ মাসে সেই স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়। কিন্তু হাই কোর্টের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায় সিবিআই। তদন্তকারী সংস্থাটির বক্তব্য, এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ মামলায় দীর্ঘ দিন ধরে তদন্ত বন্ধ থাকতে পারে না।

সিদ্দারামাইয়াকে মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত করলে আগামী লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে জেডি (এস)-এর সমঝোতার সম্ভাবনা কার্যত ইতি হয়ে যাবে। জেডি(এস)-এর টিকিটে জিতেই একদা কংগ্রেসের সঙ্গে জোট সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন সিদ্দা। পরে দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য দেবগৌড়া তাঁকে বহিষ্কার করেন। পুরনো ব্যক্তিগত সংঘাতের কারণে ওবিসি নেতা সিদ্দা কিছুতেই দেবগৌড়ার সঙ্গে সমঝোতায় রাজি হবেন না বলেই কংগ্রেসের একাংশের ধারণা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement