আবর্জনা ঘেঁটে প্লাস্টিক কুড়োচ্ছিলেন এক বৃদ্ধা। পিছন থেকে ডাক এল, “ও মাসি, কী করছ?” ডাক শুনেই কাগজ কুড়ানো থামিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েই থমকে যান বৃদ্ধা। মুখের হাবভাবে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ধরা পড়ছিল তাঁর। বৃদ্ধাকে হাঁক পাড়া সেই যুবক এগিয়ে আসেন। তাঁকে ফের জিজ্ঞাসা করেন, “কী করছিলে মাসি।” বৃদ্ধার উত্তর, “কাগজ কুড়োচ্ছিলাম।”
বৃদ্ধার সঙ্গে কথোপকথনে যুবক জানতে পারেন, আবর্জনা ঘেঁটে কাগজ কুড়িয়ে সেগুলি বিক্রি করে যা টাকা পান, তা দিয়েই খেয়েপরে বেঁচে থাকেন। কোনও দিন ভাল পরিমাণ কাগজ কুড়োতে পারলে বেশি টাকা পান, আবার কোনও সেটুকুও জোটে না। কিন্তু পেট তো চালাতেই হবে। আর পেটের টানেই ন্যুব্জ হয়ে পড়া শরীর টানতে টানতে নিয়ে বেরিয়ে পড়েন এ মহল্লায়, ও মহল্লায়। সারা দিন ঘুরে যা পান, তা দিয়ে খাবার কিনে বাড়িতে ফেরেন।
এই বয়সেও বৃদ্ধার জীবন সংগ্রাম যুবককে যেন আরও কৌতূহলী করে তোলে। বৃদ্ধার বাড়িতে যান। অতি জীর্ণ একচালার একটি টিনের ঘর। বস্তির মধ্যেই সেই ঘর। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। বৃদ্ধার এই জীবন সংগ্রামকে কুর্নিশ জানিয়ে তাঁকে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নেন তরুণ মিশ্র নামে ওই যুবক। তিনি এক জন ভ্লগার।
বৃদ্ধাকে সঙ্গে নিয়ে ঠেলাগাড়ি তৈরির কারখানায় যান। সেখান থেকে একটি ঠেলাগাড়ি কেনেন। তার পর সব্জির বাজারে যান। সেখান থেকে বেশ কিছু সব্জি কেনেন। তার পর বাড়িতে পৌঁছে দেন। ঠেলাগাড়ি, সব্জি, দাড়িপাল্লা কিনে দিয়ে বৃদ্ধাকে ব্যবসা খুলে দেন। এক জন কাগজকুড়ানি থেকে বৃদ্ধাকে এক নতুন জীবনে এগিয়ে চলার পথ খুলে দেন তরুণ।
তাঁর এই ভিডিয়ো শেয়ার করেছেন আইএএএস অফিসার অবনীশ শরণ। তরুণের এই কাজকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন সকলে। অনেকে বলেছেন, “মহৎ কাজ করেছেন যুবক।” অনেক আবার বলেছেন, “হৃদয় জিতে নিলেন ভ্লগার।”