Education

ইউপিএসসি উত্তীর্ণ দৃষ্টিহীন তরুণী

প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার মহম্মদ কাইফ সুন্দরীর প্রশংসা করে জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত ‘অডিয়ো স্টাডি মেটেরিয়াল’ মেলেনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চেন্নাই শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২০ ০৫:১৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। কিন্তু অধ্যবসায় ও অনমনীয় জেদকে আশ্রয় করেই ইউপিএসসি পরীক্ষার কঠিন বাধা পেরোলেন তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ের বাসিন্দা পূর্ণ সুন্দরী। সর্বভারতীয় এই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ২৮৬তম স্থান পেয়েছেন তিনি। তাঁর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত নেটিজেন থেকে তারকাও।

Advertisement

প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার মহম্মদ কাইফ সুন্দরীর প্রশংসা করে জানিয়েছেন, পর্যাপ্ত ‘অডিয়ো স্টাডি মেটেরিয়াল’ মেলেনি। বন্ধু ও পরিবারের সদস্যেরা কখনও বই পড়ে শুনিয়ে কিংবা ‘অডিয়ো ফরম্যাটে’ পরিবর্তিত করে পড়াশোনার বিষয়গুলি তুলে ধরতেন তাঁর সামনে। এ ভাবেই প্রতিকূলতাকে পিছনে ফেলে স্বপ্নকে তাড়া করে গিয়েছেন ২৫ বছরের এই তন্বী। সুন্দরী নিজেও জানিয়েছেন, সারা দিন ধরে কখনও বাবা কখনও মা তাঁকে বই পড়ে শোনাতেন। আর বন্ধুরা পড়াশোনার বিষয়গুলি অডিয়ো ফরম্যাটে পরিবর্তন করে সুন্দরীকে ক্রমাগত সাহায্য করে গিয়েছে। এর আগেও তিন বার ইউপিএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু প্রতিবারই ফিরেছেন খালি হাতে। তা বলে হাল ছেড়ে দেননি। বরং সফল হওয়ার প্রবল আকাঙ্খাকে সম্বল করেই লক্ষ্যে পৌঁছেছেন তিনি।

সুন্দর জানিয়েছেন, আর পাঁচটা শিশুর মতোই ছোট থেকে বেড়ে উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু পাঁচ বছর বয়সে প্রথম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে প্রথম চোখের সমস্যা শুরু হয়। চিকিৎসকেরা জানান, এক বিরল রোগে আক্রান্ত তিনি। মাদুরাইয়ের অরবিন্দ আই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, সুন্দরীর ডান চোখ সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। বড়জোর বাঁ চোখটিকে রক্ষার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কিন্তু অস্ত্রোপচারের পরে বাঁ চোখটির কার্যকারিতাও নষ্ট হয়। এত কম বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারালেও পড়াশোনায় তার প্রভাব পড়তে দেননি সুন্দরী। এসএসএলসি পরীক্ষায় স্কুলে প্রথম, পরে উচ্চ মাধ্যমিকের সমতুল পরীক্ষাতেও ঈর্ষণীয় সাফল্য পেয়েছিলেন তিনি। ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে ফতিমা কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেন।

Advertisement

নিজের সাফল্যের জন্য বাবা কে মুরুগেসান এবং মা অভুদাইদেবীকে কৃতিত্ব দিতে চান সুন্দরী। তাঁর কথায়, ‘‘ছোট থেকেই বাবা-মা পাশে থেকেছেন। এই সাফল্য তাঁদের উৎসর্গ করতে করছি। গত পাঁচ বছর ধরে ইউপিএসসি-র জন্য চেষ্টা করেছি। এই নিয়ে চতুর্থ বার পরীক্ষা দিয়েছিলাম।’’

একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় থেকেই আইএএস অফিসার হওয়ার স্বপ্ন সুন্দরীর। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নারী ক্ষমতায়নের উপর কাজ করতে আগ্রহী তিনি। এক নতুন সমাজের স্বপ্ন দৃষ্টিহীনের চোখে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement