মণিপুরে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে মহিলাদের সমাবেশ। ছবি: পিটিআই।
হিংসাদীর্ণ মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানো এবং গণধর্ষণের ঘটনার তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই সোমবার মামলার চার্জশিট জমা দিল। চার্জশিটে রয়েছে মোট সাত জন অভিযুক্তের নাম। তাঁদের মধ্যে এক জন নাবালক।
চলতি বছরের গত ৪ মে ইম্ফল থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে কংপোকপি এবং থৌবল জেলার সীমানাবর্তী এলাকায় দুই কুকি জনজাতির মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানো হয় বলে অভিযোগ। গণধর্ষণ করা হয় বলেও দাবি। কিছু দিন আগে ঘটনার একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে (ওই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন)। ২৬ সেকেন্ডের ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার পরেই দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
এর পর দুই নির্যাতিতার এক জন গত ৪ মের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানান। তাঁর দাবি, খুনের ভয় দেখিয়ে দুষ্কৃতীরা সে দিন তাঁদের জনসমক্ষে পোশাক খুলতে বাধ্য করেছিল। জানান, সেই ঘটনা নিয়ে গত ১৮ মে কংপোকপি জেলার বি ফাইনম গ্রামের প্রধানের সাহায্যে ওই জেলারই সাইকুল থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন। দায়ের করেছিলেন, ‘জ়িরো এফআইআর’। প্রসঙ্গত, ‘সাধারণ এফআইআর’ বলে, ঘটনাস্থল যে থানা এলাকায়, এফআইআর দায়ের করতে হবে সেখানেই। কিন্তু ‘জ়িরো এফআইআর’ যে কোনও থানায় দায়ের করা যায়। অপরাধের ঘটনা যে থানার এলাকাতেই ঘটুক না কেন। ওই থানা অভিযোগ তখন সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠিয়ে দেয়। অর্থাৎ, এই ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে নির্যাতিতা বা তাঁর পরিবারের লোকেদের ঘটনাস্থলের থানায় যেতে হয় না।
ওই মহিলা জানান, সে দিন তাঁর বাবা এবং ভাইকে খুন করেছিল উন্মত্ত জনতা। কিন্তু অভিযুক্তদের কেউ গ্রেফতার হননি। ওই ঘটনায় নিন্দায় সরব হয় নানা মহল। তার পরেই একে একে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। অত্যাচারের ভিডিয়ো যিনি তুলেছিলেন, তাঁকেও গ্রেফতার করা হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় তাঁর ফোন। মণিপুরের বিজেপি সরকারের মতের ভিত্তিতে গত ২৭ জুলাই মামলার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। ২৯ জুলাই নিয়মমাফিক এফআইআর দায়ের করে মামলার তদন্ত শুরু করেছিল সিবিআই।