Manipur Violence

বোমা-মর্টার মণিপুরে, বৈঠকে কেন্দ্রীয় কর্তারা

গত সন্ধ্যায় কুকিদের যৌথ মঞ্চ আইটিএলএফ ও জয়েন্ট ফিলানথ্রপিক অর্গানাইজ়েশনের সদস্যদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:৪২
Share:

—প্রতীকী ছবি।

মণিপুরে শুক্রবার সকালে ফের কুকি এলাকায় হানা দিল মেইতেইরা। চূড়াচাঁদপুরের সুগনুতে তিনটি গ্রাম লক্ষ্য করে বোমা ও মর্টার ছোড়ে তারা। গুলিও চালানো হয়। আসাম রাইফেলস পাল্টা গুলি চালালে হামলাকারীরা ফিরে যায়। হতাহতের খবর নেই। অপহৃত দুই মেইতেই ছাত্র ও তিন কুকির কোনও সন্ধান এ দিনও মেলেনি। মেইতেই যৌথ মঞ্চের ডাকা ৩৩ ঘণ্টার বন্‌ধে ইম্ফলের জনজীবন ছিল স্তব্ধ।

Advertisement

গত সন্ধ্যায় কুকিদের যৌথ মঞ্চ আইটিএলএফ ও জয়েন্ট ফিলানথ্রপিক অর্গানাইজ়েশনের সদস্যদের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়েছে। প্রতিনিধিদলে ছিলেন আইবির যুগ্ম অধিকর্তা মনদীপ সিংহ তুলি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের উপদেষ্টা এ কে মিশ্র। নিহত কুকিদের দেহগুলি গণকবর দেওয়া নিয়ে বিতর্কের জেরে এখনও ৩৫টি দেহ মর্গেই রয়েছে। কবরের জন্য কুকিরা যে এলাকা বেছে নিয়েছে, তা আগে মেইতেইদের এলাকা ছিল। তাই সরকার পক্ষ এখনও স্থান বদলের জন্য চাপ দিচ্ছে। ফলে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। অগস্টে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, কুকি এলাকায় মেইতেই বাহিনী মোতায়েন করা হবে না। কিন্তু সম্প্রতি মোরের এসডিপিওর হত্যাকাণ্ডের পরে যে ভাবে মেইতেই কমান্ডো নামিয়ে মোরে ‘দখল’ করেছে রাজ্য সরকার, তা নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিনিধিদের কাছে তীব্র আপত্তি জানায় কুকিরা। মন্ত্রকের প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এমনটা হবে না।

মিশ্র জানিয়েছেন, সংঘর্ষবিরতিতে থাকা কুকি সংগঠনগুলি তাদের দাবিগুলি জমা দিয়েছে। সে সব কেন্দ্রের বিবেচনাধীন। তিনি কুকিদের কাছে হিংসা পরিহার করার অনুরোধ জানান। আইটিএলএফ জানায়, মেইতেইরা আক্রমণ করলে আত্মরক্ষার জন্য তাদেরও অস্ত্র ধরা ছাড়া উপায় নেই। তাদের অভিযোগ, সিবিআই ও এনআইএ শুধু মেইতেইদের বিরুদ্ধে হওয়া অপরাধ নিয়েই তদন্ত ও পদক্ষেপ করছে। কুকিদের সঙ্গে হওয়া আরও নৃশংস অপরাধের কোনও তদন্ত হচ্ছে না। মনদীপ জানান, ন্যায় ও তদন্তে কোনও বৈষম্য হবে না। তিনি বিষয়টি সিবিআই ও এনআইএ-র সঙ্গে আলোচনা করবেন। আইটিএলএফ দাবি করে, সরকারি অস্ত্রাগার থেকে অবাধে অস্ত্র লুট করে সেগুলি হাতে নিয়ে, পুলিশের বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট গায়ে চড়িয়ে মেইতেই বাহিনী প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কেন্দ্র দ্রুত লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধারের আশ্বাস দেয়। কুকিরা চূড়াচাঁদপুর থেকে সপ্তাহে দু’বার মিজ়োরাম পর্যন্ত হেলিকপ্টার চালানো ও চূড়াচাঁদপুর, কাংপোকপি, মোরের মধ্যে কপ্টার পরিষেবা চালু করার দাবিও জানিয়েছেন।

Advertisement

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য স্থায়ী আবাসন প্রকল্প চালু করে জানান, পুড়ে যাওয়া পাকা, আধা-পাকা এবং কাঁচা বাড়ি নির্মাণের জন্য যথাক্রমে ১০ লক্ষ, ৭ লক্ষ ও ৫ লক্ষ টাকা দুই কিস্তিতে দেবে সরকার। ক্ষতিগ্রস্তেরা প্রথম কিস্তির টাকা ব্যবহার করে চলমান নির্মাণের ছবি জমা দিয়ে দ্বিতীয় কিস্তির জন্য আবেদন করতে পারেন।

এ দিকে, মণিপুরের নাগা এলাকা উখরুলে মাদক-বিরোধী অভিযান শুরু করেছে রাজ্য সরকার। আসাম রাইফেলসের করা সমীক্ষার ভিত্তিতে উখরুল পুলিশ, বন দফতর ও মণিপুর রাইফেলসের যৌথ বাহিনী বিভিন্ন পাহাড়ের গায়ে থাকা পপি খেত ধ্বংস করে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement