বিক্রমাদিত্য সিংহ। — ফাইল চিত্র।
মাচলপ্রদেশে রাজনৈতিক অচলাব্যবস্থা যেন কাটছেই না। আবারও কংগ্রেস নেতৃত্বের উপর চাপ বাড়ালেন ‘বিক্ষুব্ধ’ বিক্রমাদিত্য সিংহ। শুক্রবারই বিজেপি শাসিত হরিয়ানার পঞ্চকুলায় গিয়ে বিদ্রোহী ছ’জন কংগ্রেস বিধায়কের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। শনিবার নিজের ফেসবুক বায়ো থেকে মুছে ফেললেন ‘রাজনৈতিক’ পরিচয়। এত দিন তাঁর বায়োতে লেখা ছিল ‘পিডব্লিউ মন্ত্রী’ এবং ‘জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য’। সেই পরিচয় উড়িয়ে দিয়ে শুধু লেখা, ‘হিমাচলের সেবক’।
মঙ্গলবার রাজ্যসভার ভোটে কংগ্রেসের আইনজীবী-নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে হারিয়ে বিজেপি প্রার্থী হর্ষ মহাজন নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সুখু সরকারের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। বুধবার সকালে জল্পনা বাড়িয়ে হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে রাজ্যের মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন বিক্রমাদিত্য।
তার পর থেকেই হিমাচলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত বীরভদ্র সিংহের ছেলে বিক্রমাদিত্যের দল ছাড়ার ব্যাপারে জল্পনা শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নামে কংগ্রেস নেতৃত্ব। দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকেরা একাধিক বৈঠক করেন বিক্রমাদিত্য এবং তাঁর মা প্রতিভার সঙ্গে। রাজনৈতিক মহলের একাংশ দাবি করেন, বৈঠকে বরফ গলবে। তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বীরভদ্র-পুত্র। তিনি জানিয়েছিলেন, বৃহত্তর স্বার্থে এবং দলের ঐক্য বজায় রাখার লক্ষ্যে ইস্তফা ফিরিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলেন বিক্রমাদিত্য।
এই আবহেই শুক্রবার হিমাচলের বিদ্রোহী ছ’জন কংগ্রেস বিধায়কের সঙ্গে বিক্রমাদিত্য বৈঠক করে বলেন, ‘‘ওঁদের অনেকে ভুল বুঝতে পেরে কংগ্রেসে ফিরে আসতে চান। আমি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে-সহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব।’’ উল্লেখ্য, দলীয় হুইপ অমান্য করে বুধবার রাজ্য বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর সরকারের বাজেট প্রস্তাব সংক্রান্ত অর্থবিলের পক্ষে ভোট না-দেওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার ‘দলত্যাগ বিরোধী আইনে’ হিমাচল বিধানসভা স্পিকার কুলদীপ সিংহ পঠানিয়া ওই ছ’জন বিধায়কের পদ খারিজ করেছিলেন।
ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবার রাজ্যসভার ভোটপর্ব শুরুর আগেই প্রতিভা সরাসরি দলের ভাঙনের কথা জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘বর্তমান সরকারের কার্যকলাপে কংগ্রেস বিধায়কদের একাংশের ক্ষোভ রয়েছে। রাজ্যসভা ভোটে তার প্রভাব পড়তে পারে।’’ হয়েছেও তাই। বুধবার থেকেই ‘বেসুরো’ বিক্রমাদিত্য। চার দিন পরেও জট যে কাটেনি, তা শনিবার বীরভদ্র-পুত্রের পদক্ষেপ থেকে স্পষ্ট।