ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা থেকে কংগ্রেস মুছে যাওয়ার পরেও অধীররঞ্জন চৌধুরীর কোনও ‘শাস্তি’ হয়নি কেন, সেই প্রশ্ন তুললেন দলের প্রবীণ নেতা বীরাপ্পা মইলি।
মনমোহন-সরকারের মন্ত্রী মইলি আজ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে তোপ দেগে বলেছেন, অধীরের সঙ্গে নিচুতলার কোনও যোগাযোগই নেই। তাঁর একমাত্র কৃতিত্ব, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কে কড়া ভাষা ব্যবহার করেন, মানুষ যা পছন্দ করেনি। কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্ক তৃণমূলে সরে গিয়েছে। এখানেই কংগ্রেসের রণনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে মইলির মত, কংগ্রেসের উচিত ছিল পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের সঙ্গে জোট বাঁধা। মমতা যখন বিজেপির সঙ্গে লড়ছেন, তখন তাঁর সঙ্গেই স্বাভাবিক নিয়মে কংগ্রেসের জোট হওয়া দরকার ছিল। তার বদলে সিপিএম, আইএসএফ-এর মতো ‘ভুল জোট শরিক’ বাছাই করেই কংগ্রেস বাংলার বিধানসভা থেকে মুছে গিয়েছে বলে মইলির দাবি। তিনি বলেন, “এর পরেও ওই ব্যক্তির কোনও শাস্তি হয়নি। তিনি এখনও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি, লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতার পদে রয়ে গিয়েছেন। যদি পার্টির তরফে কাউকে দায়বদ্ধ না করা হয়, কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না-নেওয়া হয়, তা হলে কে গুরুত্ব দেবে?”
মইলি কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতাদের গোষ্ঠী জি-২৩-র এক জন। পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের পরে বিক্ষুব্ধরা ফের সরব হবেন, তা প্রত্যাশিত ছিল। মইলি কার্যত তারই সূচনা করে দিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু মইলি যে সব প্রশ্ন তুলেছেন, তা-ও ফেলে দেওয়া যায় না বলে কংগ্রেস নেতাদের মত। কারণ এআইসিসি-তে পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত জিতিন প্রসাদও ওয়ার্কিং কমিটিতে দাবি তুলেছেন, তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্ক কী হবে, তা স্পষ্ট হওয়া দরকার।
মইলি বলেছেন, কংগ্রেসের চিরাচরিত শক্ত ঘাঁটিতেও কংগ্রেসের ভোটাররা মমতার দিকে সরে গিয়েছেন। ভোটের পরে মালদা-মুর্শিদাবাদের ভোটের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে অধীরও সে কথা মেনে বলেছিলেন, কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্ক তৃণমূলে চলে গিয়েছে। আজ মইলির মন্তব্য নিয়ে অবশ্য অধীর কোনও মন্তব্য করতে চাননি। গত বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের বক্তব্য, তিনি জাতীয় নেতাদের অভিযোগ নিয়ে মন্তব্য করতে চান না। তবে বিজেপি, তৃণমূলের সঙ্গে লড়তে বামেদের সঙ্গে জোটই পথ বলে মান্নানের মত। বাকি সমস্যা তিনি সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখে জানিয়েছেন।
কংগ্রেস হাই কমান্ড মনে করছে, বামেদের সঙ্গে জোট হলেও তা দানা বাঁধেনি। এ বিষয়ে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বের তরফেও গড়িমসি ছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। কংগ্রেসের একটি সূত্র বলছে, সনিয়া গাঁধী জানুয়ারির মধ্যেই বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করতে বলেছিলেন। কিন্তু তা হয়নি। নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরেও দেখা যায়, প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হয়নি। তখনও প্রার্থী হতে ইচ্ছুক নেতাদের আবেদন করতে বলা হচ্ছে। এআইসিসি-র এক নেতা বলেন, ইতিমধ্যেই হারের কারণ খুঁজতে সনিয়া কমিটি তৈরি করেছেন। সেখানেই যাবতীয় বিষয়ে আলোচনা হবে।