জলমগ্ন রাস্তায় পারাপারের চেষ্টা। বুধবার বেঙ্গালুরুতে। পিটিআই
সোমবার থেকে টানা বৃষ্টিতে বেহাল কর্নাটকের রাজধানী বেঙ্গালুরু। নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে জলের নীচে শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা। পরিস্থিতি এমনই যে আজও শহরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করে প্রশাসন। প্লাবিত এলাকাগুলিতে উদ্ধারের কাজ চালাচ্ছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। বেঙ্গালুরুর সিলিকন ভ্যালির বাসিন্দাদের জীবনও বিপর্যস্ত। রশিদ প্রেমজি, বায়জু রবীন্দ্রের মতো শিল্পপতিদের আবাসনও জলের নীচে। নৌকো করে উদ্ধার করতে হয়েছে বহু ধনী ব্যক্তিকে।
প্রবল বৃষ্টিতে প্লাবিত অতি অভিজাত এলাকা ‘এপসিলন’। প্রেমজি, ব্রিটানিয়ার সিইও বরুণ বেরির মতো মানুষজন যেখানে থাকেন সেই এলাকাও দুর্যোগের হাত থেকে রেহাই পায়নি। ওই এলাকায় থাকেন বিগ বাস্কেটের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অভিনয় চৌধরি, পেজ ইন্ডাস্ট্রির এমডি অশোক জেনোমালের মতো ব্যক্তিরা। টানা বৃষ্টির ফলে অতি অভিজাত এলাকায় কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাড়িগুলির অনেকটাই জলের নীচে। এই সকল ধনকুবেরদের বাড়িগুলিতেও জল ও বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। এই এপসিলন কতটা অভিজাত এলাকা তা বোঝা যায়, সেখানের জমির দাম থেকেই। এখানে একটি ভিলার দাম ১০ কোটি টাকা। ৮০ কোটি টাকায় কিনতে হয় এক একর জমি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এপসিলন এলাকার একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে এক জন দেখাচ্ছেন, ধনকুবেরদের বিদেশি গাড়িগুলি কার্যত জলে ভাসছে। এড-টেক প্ল্যাটফর্ম আনঅ্যাকাডেমির সিইও গৌরব মুঞ্জাল আজ একটি টুইট করেছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের সোসাইটির একাংশ জলের নীচে। পরিবারের সদস্য এবং পোষ্য অ্যালবাসকে একটি ট্র্যাক্টরে অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি খুবই খারাপ’। সেই ভিডিয়োটিও তিনি টুইটারে নিজের হ্যান্ডলে পোস্ট করেছেন। এই দুর্যোগের সময়ে তিনি আমজনতাকে সাধ্যমতো সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। তাঁর অফিসের চিফ অপারেটিং অফিসার বিবেক সিংহ তাঁর আবাসনের আশপাশের জলমগ্ন এলাকার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন। ওই ভিডিয়োতে প্লাবিত এলাকায় জলে ভাসতেথাকা গাড়িগুলি দেখে মনে হচ্ছে, যেন কোনও খেলনা গাড়িকে জলে ভাসানো হয়েছে।
প্লাবিত এলাকা থেকে বাসিন্দারা অন্যত্র চলে গিয়েছেন। অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন হোটেলগুলিতে। যার ফলে হোটেলের ভাড়াও আকাশ ছুঁয়েছে। এক রাতের ভাড়া কোথাও কোথাও ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা। সূত্রের খবর, ওল্ড এয়ারপোর্ট রোড, হোয়াইটফিল্ড, আউটার রিং রোডের বহু হোটেলে আগামী শুক্রবার পর্যন্ত কোনও ঘর ফাঁকা নেই।