—ফাইল চিত্র ।
পতঞ্জলির ‘বিভ্রান্তিকর এবং মিথ্যা বিজ্ঞাপন’ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রোষের মুখে পড়তে হল উত্তরাখণ্ড লাইসেন্সিং বিভাগকেও। লাইসেন্সিং বিভাগকে ‘ছেড়ে কথা বলা হবে না’ বলেও মন্তব্য করল শীর্ষ আদালত।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে পতঞ্জলি মামলার শুনানি চলাকালীন, বিচারপতি হিমা কোহলি এবং বিচারপতি আহসানউদ্দিন আমানুল্লার ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, উত্তরাখণ্ডের লাইসেন্সিং বিভাগের আধিকারিকরা পতঞ্জলির বিজ্ঞাপনগুলি নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করেননি। লাইসেন্সিং বিভাগের তিন জন আধিকারিককে একসঙ্গে বরখাস্ত করা উচিত বলেও আদালতের পর্যবেক্ষণ। এর পর সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য করে, ‘‘আমরা বিষয়টি মোটেও হালকা ভাবে নেব না। আমরা কোনও ভাবেই ছেড়ে কথা বলব না।’’
এর পরেই ডিভিশন বেঞ্চের কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চান উত্তরাখণ্ডের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)-এর জয়েন্ট ডিরেক্টর মিথিলেশ কুমার। ক্ষমাপ্রার্থনা করে মিথিলেশ বলেন, ‘‘দয়া করে আমাকে রেহাই দিন। আমি ২০২৩ সালের জুনে দায়িত্ব পেয়েছি। এই সব আমার দায়িত্ব পাওয়ার আগে হয়েছে।’’
এর পর বিচারপতি কোহলি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কেন আমরা ক্ষমা করব? কী ভাবে আপনাদের সাহস হল? আপনি কি ব্যবস্থা নিয়েছেন? আপনি ক্ষমা চাইছেন, আর সেই সব নির্দোষ মানুষের কথা ভাবুন যাঁরা এদের বিশ্বাস করে ওষুধ খেয়েছে।’’
শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, এফডিএ আধিকারিকদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গিয়েছে, আর তাই এখন ‘সতর্ক থাকার’ কথা বলছে তারা। পুরো বিষয়টিতে উত্তরাখণ্ডের এফডিএ পতঞ্জলিকে ‘আলতো করে চড় মেরেছে’ বলেও মন্তব্য করেছে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
এর পর মিথিলেশের দিকে ক্ষোভ প্রকাশ করে ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন তোলেন, কেন তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নোটিসের পর আইনি পরামর্শ নেননি? সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য, ‘‘আপনি কি আইন পড়েছেন? আপনি কি মনে করেন যে শুধু মাত্র সতর্ক করা যথেষ্ট? এই আইনে কী বিধান আছে? আপনি কী মামলা করেছেন? কী পদক্ষেপ নিয়েছেন?’’ এর উত্তরে মিথিলেশ বলেন, ‘‘আমরা এ বার ব্যবস্থা নেব।’’ প্রত্যুত্তরে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘না...এখন আপনি কয়েকদিন বাড়িতে বসে থাকবেন। অথবা অফিসে বসে চিঠি লিখতে পারেন। আপনি জনগণের স্বাস্থ্য নিয়ে খেলা করেছেন।’’
বুধবার, পতঞ্জলি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের সমালোচনার মুখে পড়েন যোগগুরু রামদেবও। যোগগুরু এবং পতঞ্জলির ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) তথা রামদেবের সহযোগী আচার্য বালকৃষ্ণের ক্ষমাপ্রার্থনা মঞ্জুর না করে শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য, ‘‘আমরা অন্ধ নই’’। পুরো বিষয়টি নিয়ে আদালত ‘‘উদার হতে চায় না’’ বলেও মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, সুপ্রিম কোর্ট এ-ও জানিয়েছে, পুরো বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের উত্তরে সন্তুষ্ট নয় শীর্ষ আদালত।