অঙ্কিতা মৃত্যুর তদন্ত হবে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে। ফাইল ছবি।
অঙ্কিতা ভাণ্ডারী হত্যাকাণ্ডের মামলার শুনানি হবে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে। প্রতিশ্রুতি উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামির। পাশাপাশি, পরিবারকে ২৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সহায়তা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
হৃষিকেশের কাছে একটি রিসর্টে রিসেপশনিস্টের চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন অঙ্কিতা। সেই রিসর্টে চাকরিরত অবস্থাতেই মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে বিজেপি নেতা বিনোদ আর্যের ছেলে রিসর্ট মালিক পুলকিত আর্য-সহ তিন জনকে। তার পরেই বিক্ষোভের আঁচে ফুঁসতে থাকে এলাকা। অভিযোগ, রিসর্টে আসা অতিথিদের সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হতে চাপ দেওয়া হত অঙ্কিতাকে। কিন্তু চাপের কাছে মাথা নত না করাতেই তাঁকে জলে ধাক্কা দিয়ে ফেলে খুন করা হয়।
অঙ্কিতার মৃত্যুর পর গত শুক্রবার বিজেপি নেতার ছেলে পুলকিত-সহ তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। চাপের মুখে পড়ে বিজেপি বহিষ্কার করে বিনোদকে। পুলকিতের দাদা অঙ্কিতকেও বিজেপি বহিষ্কার করে।
অঙ্কিতার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই ওই রিসর্টের প্রাক্তন কর্মীরা একে একে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে শুরু করেন। তাঁরা অভিযোগ করেন, উত্তরাখণ্ডের ‘বনত্র’ রিসর্টে মাদক এবং যৌনতার ছড়াছড়ি চলত। বিভিন্ন সময় সেখানে কাজ করতে যাওয়া মহিলাদের অতিথিদের সঙ্গে যৌনতায় লিপ্ত হতে চাপ দিতেন মালিক পুলকিত এবং তাঁর সহযোগীরা।
তেমনই এক প্রাক্তন কর্মী ঋষিতা বলেছেন, ‘‘রিসর্ট কর্তৃপক্ষ অতিথিদের মদ, গাঁজা এবং অন্যান্য মাদক সরবরাহ করতেন। তাঁর স্বামীও ওই রিসর্টেই হাউস কিপিংয়ের কাজ করতেন। কিন্তু দু’জনেই দু’মাস আগে চাকরি ছেড়ে দেন। তার পরেই রিসর্টের রিসেপশনিস্ট হিসেবে কাজে যোগ দেন অঙ্কিতা। অঙ্কিতার মা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। পরিবারের মুখের দিকে তাকিয়েই অঙ্কিতা উচ্চশিক্ষায় না গিয়ে ওই রিসর্টের কাজে যোগ দিয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে।’’
এই ঘটনায় বিজেপি নেতার নাম জড়িয়েছে। যদিও তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী ধামি মৃতের পরিবারকে আশ্বাস দিয়েছেন, অঙ্কিতার মৃত্যুর তদন্ত হবে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভাবে। তিনি বলেছেন, ‘‘যেই জড়িত থাকুক, কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
উত্তরাখণ্ডের শ্রীনগর শহরে অলকানন্দা নদীর ধারে অন্ত্যেষ্টি হয় অঙ্কিতার। ময়নাতদন্তের বিস্তারিত রিপোর্ট না পেলে মেয়ের অন্ত্যেষ্টিতে রাজি হচ্ছিল না তাঁর পরিবার। নিহত তরুণীর ‘অটোপ্সি রিপোর্ট’-এ উল্লেখ, জলে ডুবেই মারা গিয়েছেন অঙ্কিতা। তাঁর শরীরের চার-পাঁচটি জায়গায় আঘাতের চিহ্নও মিলেছে।