মেনকা গম্ভীরের মামলা আবার বৃহস্পতিবার শুনবে আদালত। ফাইল চিত্র।
ইডির বিরুদ্ধে মেনকা গম্ভীরের অভিযোগ কি সত্যি? ইডি-র কাছেই এর উত্তর চাইল কলকাতা হাই কোর্ট। একটি হলফনামা দিয়ে ইডিকে এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানাতে বলে হাই কোর্ট বলেছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যেই ওই হলফনামা জমা দিতে হবে। একই ভাবে কলকাতা বিমানবন্দরের অভিবাসন দফতরের বিরুদ্ধে মেনকা যে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনেছিলেন, সে ব্যাপারেও অভিবাসন দফতরের বক্তব্য জানতে চেয়েছে আদালত।
ইডি এবং অভিবাসন দফতরের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনেছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্যালিকা মেনকা। কয়লা পাচার মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে ‘কড়া পদক্ষেপ’ করা যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। মানেকার অভিযোগ ছিল, সেই নির্দেশ মানা হয়নি। ব্যাঙ্কক যাওয়ার পথে তাঁকে বিমানবন্দরেই আটকে দেওয়া হয়। তার পর তাঁকে বিমানবন্দরেরই একটি ঘরে টানা দু’ঘণ্টা আটকে রাখে অভিবাসন দফতর। মেনকার আইনজীবী আদালতকে বলেন, এই ‘আটক’ করে রাখাও এক ধরনের কড়া পদক্ষেপ। সেক্ষেত্রে ইডি এবং অভিবাসন দফতর আদালতের নির্দেশ অমান্য করেছে। আদালতের অবমাননা করেছে। বুধবার এ সংক্রান্ত মামলাটির শুনানি ছিল। ইডি এবং অভিবাসন দফতরের কাছে এই অভিযোগেরই জবাব চেয়েছে আদালত।
বুধবার এই মামলায় দীর্ঘ তরজা চলে দু’পক্ষের আইনজীবীর।
মেনকার আইনজীবী বলেন, ‘‘আদালত রক্ষাকবচ দিয়েছে। কড়া পদক্ষেপ করা যাবে না নির্দেশ দিয়েছে। তার পরও বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয়েছে। বিদেশ যেতে দেওয়া হয়নি। তলব করলেও যাওয়া হচ্ছে। তার পরও কেন বাধা?
বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য পাল্টা জানতে চান, ‘‘এটা কী ভাবে আদালত অবমাননা হতে পারে? সেই ব্যাখ্যা দিন।’’
জবাবে মেনকার আইনজীবী বলেন, ‘‘কড়া পদক্ষেপ নয় মানে কিন্তু আটক করেও রাখা যাবে না। উনি তো তদন্তে সাহায্য করতেও প্রস্তুত।’’
এর পরই ইডির আইনজীবী বলেন, ‘‘২৫ মার্চ লুক আউট সার্কুলার জারি হয়েছিল মানেকার বিরুদ্ধে। তার জেরেই আটকে দেওয়া হয়। আদালত কড়া পদক্ষেপ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ৩০ অগস্ট। তার পর আমরা কোনও কড়া পদক্ষেপ নিইনি। তা ছাড়া কড়া পদক্ষেপ নয় মানে আমরা বুঝি গ্রেফতার করা যাবে না।’’
প্রসঙ্গত, কয়লাপাচার মামলায় জড়িত সন্দেহে মেনকাকে গত ১০ সেপ্টেম্বর বিমানবন্দরে আটক করা হয়েছিল। রাত ৮টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে ব্যাঙ্কক যাওয়ার জন্য উড়ান ধরতে এসেছিলেন অভিষেকের শ্যালিকা। কিন্তু বিমানবন্দরে পৌঁছে তিনি পাসপোর্ট টিকিট কাউন্টারে জমা দিয়ে বোর্ডিং পাস নিতে গেলে তাঁকে বিমানে উঠতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এর পর অভিবাসন দফতর তাঁকে প্রায় আড়াই ঘণ্টা বিমানবন্দরের একটি ঘরে বসিয়ে রাখে বলেও অভিযোগ করেন মেনকা। দীর্ঘ ক্ষণ অপেক্ষা করানোর পর অভিবাসন দফতর তাঁকে জানায়, একটি বিশেষ মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করেছে ইডি। তাই তিনি বিমানে উঠতে পারবেন না এবং শহর ছাড়তে পারবেন না। এই আচরণের প্রতিবাদ জানিয়েই আদালত অবমাননার মামলা করেন মেনকা।