আইনি বৈধতা নেই ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্পের, জানাল হাই কোর্ট। ফাইল ছবি।
রাজ্য সরকারের দুয়ারে রেশন প্রকল্প ২০১৩-এর জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের পরিপন্থী, রায় কলকাতা হাই কোর্টের। খারিজ হয়ে গেল ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প। বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আইনের চোখে এই প্রকল্পের কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই।
গত বিধানসভা ভোটে বিপুল জয়ের পর দুয়ারে রেশন প্রকল্প নিয়ে এসেছিল রাজ্য সরকার। তার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা হয় হাই কোর্টে। সেই মামলাতেই বুধবার মমতার দুয়ারে রেশন প্রকল্পের আইনি বৈধতা নেই বলে জানিয়ে দিল আদালত।
একুশের নীলবাড়ির লড়াইয়ের ইস্তাহার এবং প্রচারপর্ব চলাকালীন বিভিন্ন মঞ্চ থেকে মমতা, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দের মুখে শোনা গিয়েছিল, রেশন দোকানের লাইন অতীত হতে চলেছে। ক্ষমতায় ফিরলেই মানুষের দোরে দোরে রেশন পৌঁছে দেওয়া হবে। প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে ক্ষমতায় ফেরার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা ঘোষণা করেন, এখন থেকে প্রতি বাড়িতে গিয়ে রেশন সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হবে। সে জন্য নির্দিষ্ট পরিকল্পনাও তৈরি করে নবান্ন। কিন্তু বাস্তবে পরিকল্পনা রূপায়ণ করতে গিয়ে হিমসিম খেতে হয় বলে রেশন ডিলারদের অভিযোগ। এ নিয়ে প্রথমে একটি মামলা হয়েছিল এই কলকাতা হাই কোর্টেই। কিন্তু আদালত সেই মামলা খারিজ করে দেয়। পরে বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাশ এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে নতুন করে মামলা করেন রেশন ডিলারদের একটি অংশ। সেই মামলাতেই বুধবার মমতা সরকারের ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পের আইনি বৈধতা নেই জানিয়ে দিলেন বিচারপতিরা। যাকে রাজ্য সরকারের কাছে বড় ধাক্কা বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যতম মামলাকারী বিশ্বম্ভর বসু কলকাতা হাই কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুজোর আগে এত বড় জয় সত্যিই আমাদের কাছে সেরা পুজো উপহার।’’
প্রসঙ্গত, বাংলার দেখানো পথে হেঁটেই দিল্লির কেজরীওয়াল সরকারও রাজধানীতে দুয়ারে রেশন পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প তৈরি করেছিল। কিন্তু আদালতের আপত্তিতে তা মাঝপথেই থামিয়ে দিতে হয়। এ বার একই প্রকল্পের আইনি বৈধতা না থাকায় তা খারিজ করতে হবে বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাই কোর্টও।