প্রতীকী ছবি।
উত্তরপ্রদেশে লোনিতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তিকে নিগ্রহের ঘটনায় আরও বেকায়দায় টুইটার। ওই মামলায় টুইটার-সহ সব অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নোটিস জারি করবে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। নিগ্রহের ঘটনা নিয়ে নেটমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিয়ো-সহ টুইট নিয়ে তোলপাড় শুরু হতেই ভুয়ো তথ্য পরিবেশনের অভিযোগ তুলেছে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের পুলিশ-প্রশাসন। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে টুইটার-সহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রুজু করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ।
বুধবার সংবাদমাধ্যমে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের অতিরিক্ত ডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) প্রশান্ত কুমারের দাবি, গাজিয়াবাদ জেলার লোনি এলাকায় যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ব্যক্তিকে নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে আসল তথ্য খতিয়ে দেখার প্রয়োজন ছিল টুইটার কর্তৃপক্ষের। প্রশান্তের কথায়, “ওই মামলায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ব্যাখ্যার পরেও যাঁরা ভুল তথ্য টুইট করেছেন, তাঁদের সেগুলি খতিয়ে দেখে টুইটগুলি সরানোর হুঁশিয়ারি দেওয়া উচিত ছিল টুইটারের। আমরা টুইটার-সহ সব অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নোটিস জারি করব।” নিগ্রহের মামলায় প্রশান্তের দাবি, “অভিযুক্তদের বিষয়ে কোনও ছুতমার্গ করা হবে না। তবে এ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের লোনি শহরে সুফি আব্দুল সামাদ নামে এক ব্যক্তিকে নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে। তাবিজ বিক্রির সময় ওই ব্যক্তিকে জোর করে ‘বন্দে মাতরম্’ এবং ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিতে বলা হয়েছে বলে অভিযোগ। এমনকি, ওই ব্যক্তির দাড়িও কেটে নেওয়া হয় বলেও দাবি। নেটমাধ্যমে ওই ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই তাকে ভুয়ো বলে দাবি করেছে যোগীর পুলিশ। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজি এইচ সি অবস্থীর দাবি, গোটা ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রূপ দিয়ে অযথা বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “ওই ঘটনাটি পুরোপুরি কিছু ব্যক্তির মধ্যে ঝামেলা। এর মধ্যে হিন্দু-মুসলিম রেষারেষি নেই। এর আসল সত্য জানতে এফআইআর করা হয়েছে। এ নিয়ে সাম্প্রদায়িক ভাবাবেগ উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, যা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।”
১৪ জুন রীতিমতো বিবৃতি দিয়ে লোনি-বিতর্ক মামলায় নিজস্ব মতামত ব্যাখ্যা করে গাজিয়াবাদ পুলিশ। তবে তার ২৪ ঘণ্টা পরেও বিতর্কিত ভিডিয়ো না সরানোয় ১৫ জুন টুইটারের বিরুদ্ধে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে রেষারেষি তৈরি করা-সহ একাধিক ধারায় এফআইআর করে পুলিশ। প্রসঙ্গত, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে ইন্ধন জোগানোর অভিযোগে এ দেশে আইনি রক্ষাকবচ হারানোর পর টুইটারই প্রথম নেট-সংস্থা, যাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রের নয়া তথ্যপ্রযুক্তি আইনে ফৌজদারি মামলা করা হল।