নিজস্ব চিত্র
বিজেপি ভোটে হেরেই কলকাতা থেকে সেলের গুরুত্বপূর্ণ দফতর সরিয়ে নিচ্ছে। এমনটাই অভিযোগ করে কেন্দ্রীয় ইস্পাতমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানকে চিঠি দিলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যম মারফৎ তিনি জেনেছেন ইস্পাত মন্ত্রকের অধীন সেলের ‘র মেটেরিয়াল ডিভিশন’ (আরএমডি) সদর দফতর কলকাতা থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে একঝাঁক আশঙ্কার কথা মন্ত্রীকে শুনিয়ে রেখেছেন অমিত।
তিনি লিখেছেন, ‘এমনটা হলে প্রচুর ঠিকা শ্রমিক কর্মহীন হবেন। কোভিড অতিমারির পরিস্থিতিতে তাঁদের কঠিন অবস্থার মধ্যে ফেলে দেওয়া হবে। যাঁরা বর্তমানে ওই দফতরে কর্মরত রয়েছেন, তাঁরা স্ত্রী, সন্তান, নিয়ে বিপদে পড়ে যাবেন।’ সদ্য সমাপ্ত বিধানসভা ভোটে শোচনীয় ভাবে পরাজিত হয়েছে বিজেপি। সেই কথা স্মরণ করিয়ে অমিত লিখেছেন, ‘আরএমডি-র এই দফতরটি কলকাতা থেকে সরিয়ে নিলে ব্যাপক প্রভাব পড়বে দুর্গাপুর ও বার্নপুরের ইস্পাত শিল্পে। মনে করা হবে বিজেপি-র ভোটে পরাজয়ের কারণেই এমনটা করা হয়েছে।’
চিঠিতে মন্ত্রীকে বলা হয়েছে, সম্প্রতি মন্ত্রকের দফতর কলকাতা থেকে সরানোর কথা জানতে পেরে কর্মী ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা দিল্লিতে ইস্পাত ভবনে আধিকারিকদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। বর্তমানে সেলের চেয়ারম্যান পদের দায়িত্ব নিয়েছেন যিনি, দুর্গাপুর ও বার্নপুর স্টিল প্লান্টের শ্রমিক প্রতিনিধিদের কোনও কথাই শুনতে চাননি। তাই এই সিদ্ধান্তটি যে মন্ত্রীর, সে ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত বলেই জানিয়েছেন অমিত।
কলকাতা থেকে আরএমডি-র দফতর সরানো হলে, তার সরাসরি প্রভাব পড়বে দুর্গাপুর ও বার্নপুরে স্টিল প্লান্টে। কারণ, বর্তমানে এই দুই শিল্পাঞ্চলে কাঁচামাল পায় ৬৫০ টাকা প্রতি টন হিসেবে। কিন্তু দফতরটি একেবারে সরে গেলে খোলা বাজার থেকে কাঁচামাল কিনতে হবে ৯৫০০ টাকা টন দরে। এত চড়া দামে কাঁচামাল কিনতে হলে ক্ষতি হবে দুটি শিল্পাঞ্চলেরই। দু’টি শিল্পাঞ্চলে মোট ১৪,৪০০ মানুষ কাজ করেন। যৌথ ভাবে তাঁদের লাভের পরিমাণ ১,৪৮৬ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তে এমন দু’টি লাভজনক সংস্থা প্রবল ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।